আজান বা ইকামতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাম শুনে আঙ্গুলে চুমু খাওয়া:
আজান বা ইকামতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম এলে কোন কোন লোককে তর্জনী আঙ্গুল দুটিতে চুমু খেয়ে তা চোখে বুলাতে দেখা যায়।
তাদের এই আমলটি মূলত ‘মুসনাদের দায়লামী' নামক গ্রন্থের একটি জাল বর্ণনার উপর নির্ভরশীল।
(আর এই গ্রন্থটি তে প্রচুর পরিমাণে বাতিল রেওয়ায়েত রয়েছে)তাদের আমলকৃত জাল রেওয়ায়াতটি হল:
“হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু যখন মুয়াজ্জিনকে আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ
বলতে শুনলেন তখন তিনিও তা বললেন এবং তর্জনী আঙ্গুল দুটিতে চুমু খেয়ে তা চোখে বুলিয়ে দিলেন।”
তা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন
“যে ব্যক্তি আমার দোস্তের মতো আমল করবে তার জন্য আমার সুপারিশ অবধারিত”
আল্লামা জালাল উদ্দিন সুয়ুতি রাহমাতুল্লাহি এ সম্পর্কে বলেন-
মোয়াজ্জিনের শাহাদাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম শুনে আঙ্গুলে চুমু খাওয়া,
এবং তা চোখে মুছে দেওয়ার ব্যাপারে যতগুলো রেওয়ায়েত বা বর্ণনা বর্ণিত রয়েছে,
সবগুলোই জাল ও বানোয়াট। সূত্র – রাহে সুন্নাত,১২৩
আযানের সময় কথা বলা সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা: আযানের সময় নিয়ম হল আযানের জবাব দেওয়া।মুয়াজ্জিন যে শব্দগুলো বলবে, শ্রোতারা ও সে শব্দগুলোই বলবে।
তবে ‘হাইয়াআলাস সালাহ'এবং'হাইয়া আলাল ফালাহ' বলার পর লা- হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ পড়বে।
তারপর আজান শেষে যেকোনো দুরুদ পাঠ করবে।সবশেষে আযানের দোয়া পাঠ করবে,
এ সবই সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তবে “আজানের সময় কথা বললেঈমান চলে যাওয়ার আশঙ্কা আছে”এ কথা কোন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়।
আল্লামা সাগানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি একে জাল বলেছেন, সূত্র-রিসালাতুল মাওযূআত খণ্ড নং ১২,
আজানের সময় কথা বললে ৪০ বছরের নেকি নষ্ট হয়ে যায়: কোন কোন এলাকায় একথা ও প্রসিদ্ধ আছে যে- আযান দেওয়ার সময় এবং আযান শোনার সময়
দুনিয়াবী কোন কথা বললে ৪০ বছরের নেকি নষ্ট হয়ে যায়। একথাও ঠিক নয়
এবং তার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদিস ও নয়।
সূত্র- যাইলুল মাকাসিদিল হাসানা। সহিহ হাদিসের আলোকে আজানের সময় শ্রোতার দায়িত্ব আগেই
সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে সে মোতাবেক আমলে যত্নবান হওয়া উচিত।