(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
দাওয়াত! সামাজিকভাবে পরস্পরের সাথে মিল-মহব্বতের বহি:প্রকাশ। এছাড়াও একজন অন্য জনকে দাওয়াত
দেয় নিজের বিভিন্ন স্বার্থে । শ্রমিক মালিককে দাওয়াত দেয় চাকরি টেকসই থাকার জন্য। নিম্ন লেভের
চাকুরিজিবি উপরের লেভেলের চাকুরিজিবিকে দাওয়াত দেয় প্রমোশনের সুপারিশ করার জন্য। বিয়ের সময়
কনের বাবা আত্মীয়দের দাওয়াত দেয় বিভিন্ন উপহার পাওয়ার জন্য। সাধারণ মানুষ মসজিদের ইমান বা
মাদরাসার ছাত্র/ উস্তাদদের দাওয়াত দেয় নিজের মৃত আত্মীয়-স্বজনদের জন্য দোয়া করার জন্য। হযরত থানভী
রহ. বলেন: এই শেষ প্রকারের দাওয়াত তিন প্রকার:- উচ্চতম, মধ্যতম, নিম্নতম। বর্তমান যুগে সবচাইতে উত্তম
দাওয়াত হলো এই যে, যাকে দাওয়াত দেওয়ার প্রয়োজন হয়; তার কাছে গিয়ে নগদ হাদিয়া দিয়ে দাওয়াত দিবে।
নগদ হাদিয়া দেওয়ার অর্থ হলো, একদিকে তো তাকে কোনো কষ্ট পোহাতে হলো না। দ্বিতীয়ত নগদ হাদিয়ার মধ্যে
তার একটি অধিকার থাকবে; ইচ্ছা করলে সে ইহাকে খাওয়া দাওয়ার মধ্যে খরচ করতে পারবে অথবা অন্য
কোনো প্রয়োজনেও খরচ করতে পারবে। এতে তার মনে একটি প্রশান্তি আসবে এবং উপকারও হবে। তাছাড়া
বিন্দুমাত্র কষ্টও হবে না। এ দাওয়াতটি হলো সবচাইতে উত্তম দাওয়াত।
দ্বিতীয় প্রকারের দাওয়াত হলো; যাকে দাওয়াত দেওয়ার ইচ্ছা তার জন্য খানা পাকিয়ে তার ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া।
এই দাওয়াত দ্বিতীয় নাম্বারে এই জন্য যে, এটি শুধু খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপার। এতে খাওয়া ছাড়া অন্য কোনো
অধিকার থাকে না। কিন্ত এ খাওয়ার কারণে তাকে কোনো কষ্ট পোহাতে হয় না। মেযবান তাকে ঘরে ডেকে
কষ্টদেননি বরং মেহমানের ঘরে খাবার পৌঁছিয়ে দিয়েছেন।
তৃতীয় প্রকারের দাওয়াত হলো এই যে, দাওয়াতি মেহমানকে নিজের ঘরে ডেকে খানা খাওয়াবে। বর্তমানে এটিরই
বেশি প্রচলন রয়েছে। এতে অনেক দূরত্বের ভ্রমণের যাতনা পোহাতে হয়। উদাহরণ স্বরূপ তুমি এমন কাউকে
দাওয়াত খাওয়ানোর ইচ্ছা পোষণ করলে, যে তিন মাইল দূরত্বে অবস্থান করে। এখন তুমি দাওয়াত দিলে সে
তোমার দাওয়াত কবুল করার মানে হলো এই যে, সে তার ঘর থেকে আধা ঘন্টা পূর্বে বের হবে, পঞ্চাশ টাকা খরচ
করবে, অতপর ভ্রমণের কষ্ট-যাতনা ভোগ করে তোমার বাসায় এসে খানা খাবে। এখন তুমিই বল! এ অবস্থায়
তুমি লোকটিকে শাস্তি দিলে নাকি আরাম দিলে? যদি ইহা না করে খানা পাক করে তার ঘরে পৌঁছে দিতে অথবা
তাকে নগদ টাকা দিয়ে দিতে তাহলে তার অনেক উপকার হতো। এসব দিক বিবেচনা করে এই প্রকারের
দাওয়াতকে তৃতীয় প্রকারে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন:-
খাবারের সময় যা যা পালনীয়
সন্তানের প্রতি আদর্শ বাবার উপদেশ
আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহ. এর ঘটনা