Breaking News

ডার্ক ওয়েব কি

Dark web ডার্ক ওয়েব

কি? ইন্টারনেটের কালো অধ্যায় এর ব্যবহার এবং সতর্কতা, যারা জানেন না তাদের জন্য

 

ইন্টারনেট ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করা একটি প্রচলিত স মাধ্যম। আমরা প্রতিদিন ে সার্চ করি নানা রকম তথ্য পেতে।

 

গুগল আমাদের বিশাল তথ্য ভাণ্ডার থেকে প্রয়োজনীয় ডাটা আমাদের সামনে উপস্থিত করে।

 

অনলাইনে কথা বলা থেকে শুরু করে মুভি দেখা, গান শোনা, গেম খেলা, কেনাকাটা করা সহ সকল কাজ করা যায়।

 

ইন্টারনেটের ব্যবহার ও প্রয়োজনীয়তা বলে শেষ করা যাবে না

 

কিন্তু আমরা এটা জানিনা যে প্রতিদিন যে ইন্টারনেট আমরা ব্যবহার করি এটা মোট ইন্টারনেটের মাত্র ১০%,

 

আর বাকী যে ৯০% আছে তা আমাদের চোখের আড়ালেই থেকে যায় এবং এই বিশাল অংশকে বলা হয় ডিপ ওয়েব এবং ডার্ক ওয়েব এর একটি অংশ।

 

আজকে আমরা আলোচনা করবো ডার্ক ওয়েব কি? ডার্ক ওয়েবের অজানা রহস্য, নিষিদ্ধ ইন্টারনেট জগৎ, ডার্ক ওয়েব সতর্কতা নিয়ে। চলুন শুরু করা যাক।

 

ডার্ক ওয়েব কি?

 

আমরা ইন্টারনেটের ভেদ করতে গেলে যেটা পাই তা হলো ইন্টারনেট দুই প্রকার। সারফেস ওয়েব এবং ডীপ ওয়েব(ডার্ক ওয়েব এর অন্তর্গত)।

 

আমরা সাধারণভাবে ইন্টারনেটের যে অংশ ব্যবহার করি তা সারফেস ওয়েব। সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স করা সকল ওয়েবসাইটকে সারফেস ওয়েব বলে।

 

সারফেস ওয়েব ব্যবহার করতে গেলে কোন বিশেষ ধরনের সার্চ ইঞ্জিন বা ব্রাউজার ব্যবহার করতে হয় না।

 

অন্যদিকে ডিপ ওয়েব একটি বিশাল এবং বিস্তর ইন্টারনেট জগৎ। মোট ইন্টারনেটের ৯০% দখল করে আছে ডিপ ওয়েব।

 

 

ডিপ ওয়েবে সাধারণত সেইসব ডাটা থাকে যা ইনডেক্স করা হয়না। যেমন ডাটাবেস, সরকারি নথিপত্র, সাইন্স এর এক্সপেরিমেন্ট এর তথ্য,

 

এবং সারফেস ওয়েবের সকল ইউজার ডাটা ডীপ ওয়েবে সংরক্ষণ করা হয়।

 

আর ডিপ ওয়েবের ভিতরে ডার্ক ওয়েব বা ডার্কনেট নামে একটি অন্ধকার জগৎ আছে।

 

একটি বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে ডার্ক ওয়েবে অ্যাক্সেস নিতে হয়। ডার্কনেট অনেকটাই সারফেস ওয়েবের মতো।

 

সারফেস ওয়েবে যেমন সার্চ ইঞ্জিন আছে তেমনি ডার্ক ওয়েবে আছে ডাক ডাক গো (DuckDuckGo)।

 

ডাক ডাক গো এমন একটি সার্চ ইঞ্জিন যা ইউজারের কোন তথ্য সংগ্রহ করেনা।

 

অ্যানোনিমাস ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর জন্য এই সার্চ ইঞ্জিন বহুল ব্যবহৃত। একারনে ডার্ক ওয়েবে ডাক ডাক গো ব্যবহার করা হয়।

 

ডার্ক ওয়েব অ্যাক্সেস করতে হলে বিশেষভাবে তৈরি ইন্টারনেট ব্রাউজার ব্যবহার করতে হয়।

 

সাধারণত ডার্ক ওয়েব অ্যাক্সেস করার জন্য টর ব্রাউজার ব্যবহার করা হয়।

 

এবং ডার্ক ওয়েবের সকল ওয়েবসাইট এর এক্সটেন্সান হিসেবে ওনিওন(onion) ব্যবহার করা হয়।

 

 

 

ডার্ক ওয়েবে প্রায় সকল কিছুই অবৈধ বা বিপদজনক। তাই ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করার জন্য নিজের আইডেন্টিটি গোপন করা জরুরী,

 

তাই টর ব্রাউজার বা এধরণের অ্যানোনিমাস ব্রাউজার ব্যবহার করা হয়।

 

মোটকথা, ডার্ক ওয়েব ইন্টারনেটের একটি অন্ধকার জগৎ, যেখানে সকল প্রকার অপরাধ এবং অবৈধ জিনিস পাওয়া যায়।

 

 পর্নোগ্রাফি, সিরিয়াল কিলার, ড্রাগস, আগ্নেয়াস্র, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, পাসওয়ার্ড, পতিতা ভাড়া পাওয়া সহ সকল ধরনের সার্ভিস পাওয়া যায়।

 

এসবকিছু জানার পরে এখন অবশ্যই এই নিষিদ্ধ ওয়ার্ল্ড সম্পর্কে জানার হচ্ছে? চিন্তা করবেন না, নিচে ডার্ক ওয়েব নাড়ি-নখত্র বর্ণনা করছি।

 

ডার্ক ওয়েবের অজানা রহস্য

 

আমরা ইতিমধ্যে ডার্ক ওয়েবের ব্যাসিক সম্পর্কে জেনে গেছি। আমরা জানি ডার্ক ওয়েব সহজে অ্যাক্সেস করা যায়না।

 

এবং আমাদের দেশের মোট ইন্টারনেট ইউজারের মধ্যে ১% মানুষ ডার্ক ওয়েব অ্যাক্সেস করে এবং এর সম্পর্কে জানে।

 

তাহলে বুঝতে পারছি এটি কতটা গোপন এবং ঝামেলার।

 

সহজে অ্যাক্সেস না করতে পারার কারনে আমাদের মনে ডার্ক ওয়েব সম্পর্কে অনেক রহস্য এবং ভয় কাজ করে,

 

এর ফলে ডার্ক ওয়েব নিয়ে অনেক মিথ প্রচলিত আছে। চলুন এমন কিছু রহস্য এবং মিথ সম্পর্কে জেনে আসি।

 

মারিয়ানা ওয়েব: ডার্ক ওয়েবের মধ্যে এটি একটি গভীরতম অংশ।

 

প্রশান্ত মহাসাগরের মারিয়ানা ট্রেন্স যেমন গভীর এবং কেউ এর গভীরতম অংশে যেতে পারেনা, তেমনি ডার্ক ওয়েবের মারিয়ানা ওয়েব।

 

তবে মারিয়ানা ওয়েব মারিয়ানা ট্রেন্স থেকে একটু আলাদা।

 

কারন মারিয়ানা ওয়েবে সহজে ভাবে প্রবেশ করা না গেলেও বস লেভেলের হ্যাকার রা এই অংশে অ্যাক্সেস করে।

 

তবে কেউ এখন পর্যন্ত কল্পনাও করতে পারেনি যে সেখানে কি আছে।

 

নানান জনের নানান মত থাকলেও কেউ পরিষ্কারভাবে কিছুই বলতে পারে না।

 

সিল্ক রোড: ডার্ক ওয়েবের সকল পণ্য এবং সেবার মার্কেট নামে সিল্ক রোড বহুল পরিচিত।

 

এটি সারফেস ওয়েবের ইকমার্স প্লাটফর্ম এর মতো। সকল ধরনের অবৈধ ও অপরাধমূলক কার্যকলাপ দিয়ে সিল্ক রোড বিখ্যাত ছিল।

 

এখানে সরাসরি , আগ্নেয়াস্ত্র, সিরিয়াল কিলার, ড্রাগস সহ সকল জিনিস পাওয়া যেত।

 

অপরাধকর্মের খোলামেলা অ্যাক্সেসের জন্য সিল্করোড বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

 

রেডরুম: যদিও ্তবে এর কোন অস্তিত্ত আছে কিনা তার কোন প্রমান পাওয়া যায়না, তথাপি রেড রুম বহুল পরিচিত।

 

বিভিন্ন বর্ণনাকারী এটাকে এমনভাবে বর্ণনা করেছে যে শুনলে কলিজা কেঁপে ওঠে। বলা হয় রেড রুম এ যা কিছু করা হতো তা লাইভ স্টিমিং করা হয়।

 

সেখানে রেপ, খুন, অত্যাচার করা সহ সকল প্রকার রক্ত হিম করা া সরাসরি দেখানো হয়।

 

ভিক্টিম হিসেবে মানুষদের কে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে আসা হয় এবং কেউ কেউ অর্থ আয় করার জন্য নিজে থেকেই রেড রুমে যায়।

 

বাস্তবে এর অস্তিত্ব না থাকাই মানব ের জন্য ভালো।

 

লেনদেন পদ্ধতি: ডার্ক ওয়েব যেহেতু একটি গোপন যায়গা সেহেতু স্বাভাবিক লেনদেন করা

 

সেখানে অসম্ভব এবং সাধারণ ব্যাংক লেনদেন করলে সহজেই ইউজারকে খুঁজে পাওয়া যায়।

 

এখন অবশ্যই কেউ ব্যাংক থেকে টাকা দিয়ে ড্রাগস কিনবে না, আর যদি কিনেও তাহলে ধরা পরতে বেশি সময়ও লাগবে না।

 

এসব দিক বিবেচনা করে ডার্ক ওয়েবে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করা হয়।

 

পপুলার ক্রিপ্টোকারেন্সি এর মধ্যে বিটকয়েন একটি বহুলপ্রচলিত মানি সিস্টেম।

 

ভার্চুয়াল কারেন্সি হওয়ার কারনে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেস করা যায়না। এবং এভাবেই ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে ডার্ক ওয়েবে লেনদেন করা হয়।

 

ডার্ক ওয়েব সতর্কতা

 

পুরো পোস্ট পড়ার পর এখন নিশ্চয়ই আপনার মনে ডার্ক ওয়েবে অ্যাক্সেস করার ইচ্ছা করছে?

 

যদি তাই হয় তাহলে আমি আগেই সতর্ক করে নেই। ডার্ক ওয়েব যতটা রোমাঞ্চকর তার থেকেউ বেশি ভয়ানক।

 

পুরো সেফটি নিয়ে না নামলে বড় ধরণের ক্ষতির মধ্যে পরতে হবে।

 

কারন ডার্ক ওয়েবের ওয়েবসাইট গুলোতে কোন ধরণের সিকিউরিটি ব্যবহার করা হয়না। এবং হ্যাকাররা নানান ধরণের ভাইরাস দিয়ে রাখে।

 

আপনি ওয়েবসাইটে অ্যাক্সেস করার পর আপনাকে নানান ধরণের প্রলোভন দেখিয়ে ভাইরাস ইঞ্জেক্ট করা সফটওয়্যার ইন্সটল করাবে।

 

ডার্ক ওয়েবের এমনও কিছু ভাইরাস সম্পর্কে খোঁজ পাওয়া যায় যা আপনার পুরো সিস্টেমকে ডেড করে দিতে পারে।

 

তাই ডার্ক ওয়েবে প্রবেশের আগে আপনাকে এই বিষয় গুলো সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।

 

টর ব্রাউজার একমাত্র স্টাবল ব্রাউজার যা দিয়ে অ্যানোনিমাস ভাবে ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করা যায়।

 

এটি একটি বিশেষ ধরণের এনক্রিপসন ব্যবহার করে যা ইউজারের তথ্য এনক্রিপ্ট করে ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করায়। এর ফলে সহজে ইউজারের তথ্য বের করা যায়না।

 

কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন অনলাইনে কেউ গোপন না। তাই ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করার আগে ভালোভাবে ভেবে নিবেন।

 

যদি এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য অ্যাক্সেস করেন তাহলে অবশ্যই অযথা কোন যায়গায় ক্লিক করবেন না। কোন সাইটে রেজিস্ট্রেশন বা লগিন করবেন না।

 

উপরিউক্ত আলোচনায় আমরা ডার্ক ওয়েব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানলাম। বিশেষ কারনে ডার্ক ওয়েবকে গোপন রাখা হয়েছে।

 

যেহেতু ডার্ক ওয়েবের ভালো দিকের থেকে খারাপ দিক বেশি, সেহেতু আমরা সবসময় এর থেকে নিরাপদ থাকবো।

 

About আবদুল্লাহ আফজাল

হাফিজ মাওঃ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আফজাল। ২০১২ সনে হিফজ সম্পন্ন করেন। উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন২০১৬ সনে। দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন ২০২০ সনে। ঠিকানা: বালাগঞ্জ, সিলেট। মোবাইল নাম্বার: 9696521460 ইমেইল:hafijafjal601@gmail.com সকল আপডেট পেতে এবং ওয়েবসাইটে লিখা পাঠাতে ফেসবুক পেজ👉MD AFJALツ ফলো করুন।

Check Also

হাদিয়া ও ঘুষের মধ্যে পার্থক্য কী?

(Muslimbd24.com) হাদিয়া ও ঘুষ এক নয়, হাদিয়া ও ঘুষের মধ্যে পার্থক্য বিরাট। হাদিয়া বা উপহার …

Powered by

Hosted By ShareWebHost