(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
মুহাররাম চন্দ্র বছরের প্রথম মাস।সম্মানিত চার মাসের ৩য় মাস।হাদিস শরিফে এ মাসের অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।
আরো জানুন👉মুহাররম মাসের ফজিলত
এ মাসে বেশি বেশি নফল রোজা ও তাওবা ইস্তেগফারের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে।
افضل الصيام بعد رمضان،شهر الله المحرم،وافضل الصلوة بعد الفريضة صلواة اليل
অর্থাৎ রমজানের পর সবচে উত্তম রোজা হল আল্লাহর মাসের রোজা,যে মাসকে তোমরা মুহাররাম নামে চেন।
আর ফরজ নামাজের সবচে উত্তম নামাজ হল, রাতের নামাজ (সহিহ মুসলিম ১১১৩)
এই মাসকে আল্লাহর মাস নামে অভিহিত করার কারণ
এই মাসের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে।সেজন্য তাকে আল্লাহর মাস বলা হয়।যেমন দুনিয়ার সব ঘরই আল্লাহর ঘর কিন্তু সব ঘরকে বায়তুল্লাহ বলা হয় না।
আরো জানুন👉পৃথিবীর সর্বপ্রথম ঘর কোনটা
মুহাররাম মাসের গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত
এই মাসের গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত হলো তার সাথে তাওবা কবুলের ইতিহাস যুক্ত। মুসনাদে আহমাদ ও জামে তিরমিজিতে বর্ণিত একটি হাদিসে ইরশাদ হয়েছে।
এক ব্যক্তি নাবি সাঃ এর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করলো,
يا راسول الله اي شهر مأمروني، ان اصوم بعد رمضان؟
উত্তরে নাবি সাঃ বললেন,তুমি যদি রমজানের পর আর কোন মাসে রোজা রাখতে চাও, তাহলে মুহাররামের রোজা রাখো।
আরো জানুন👉রোজার নিয়ত এর সময় কখন হয়
কেননা সেটি আল্লাহর মাস,সেই মাসে এমন একটি দিন রয়েছে,যেদিন আল্লাহ তায়ালা অনেকের তাওবা কবুল করেছেন। ভবিষ্যতে আরও মানুষের তাওবা কবুল করবেন ( তিরমিজি ৭৫১)
এই হাদিসে যেদিনের দিকে ইশারা করা হয়েছে, খুব সম্ভব সেটি আশুরার দিন হবে।
ইস্তেগফারের জন্য উত্তম হলো, কুরআন হাদিসে বর্ণিত দোয়া মুখস্ত করা ও পাঠ করা।
মুহাররামের দশ তারিখকে কেন আশুরা বলা হয়
আশুরার দিনে রোজা রাখা মুস্তাহাব,নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কা মুকাররামায় ছিলেন,
তখনও আশুরার দিনের রোজা রাখতেন।এরপর যখন মদিনায় হিজরত করলেন,তখন নিজেও রাখতেন অপরকে রাখার জন্য নির্দেশ দিতেন।
আরো জানুন👉আশুরার দিনের সুন্নাত কাজ
তাছারা রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পূর্বে আশুরার দিনের রোজা ফরজ ছিল।
যখন রমজানের রোজা ফরজ হলো তখন আশুরার রোজা কেবল নফল হিসাবে নির্ধারিত হয়ে গেল।
তবে সাধারণ নফল রোজা থেকে তার গুরুত্ব অনেক বেশি।
হজরত আবু কাতাদা রাযিঃ থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে আশুরার রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তদুত্তরে বললেন, احتسب علي الله ان يكفر السنة التي قبله
অর্থাৎ আল্লাহর কাছে আমার আশা, তিনি এই রোজার মাধ্যমে বিগত এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। (মুসলিম ১১৬২)
হযরত হুসাইন রাযিঃ এর শাহাদাত
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের প্রায় ৫০ বছর পর ৬১ হিজরি ১০ মুহাররামে কারবালায় হযরত হুসাইন রাঃ এর শাহাদাতের ঘটনা ঘটে।
কারবালার সংক্ষিপ্ত প্রকৃত ইতিহাসঃ পর্ব ১
নিঃসন্দেহে শাহাদাত তাঁর উঁচু মাকামের বিষয়। কিন্তু উমরের জন্য তা হয়ে গেছে বড় ইমতিহানও মসিবতের বিষয়।
তবে আমাদের স্মরণ রাখতে হবেযে, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের পূর্বে আমাদের শরিয়ত পূর্নাঙ্গ হয়ে গেছে।
কিয়ামত পর্যন্ত নতুন কিছু আমাদের শরিয়তে সংযোজন কিংবা বিয়োজনকরার উপায় নাই।
শরিয়তের বিধি নিষেধ লংঘন করে শিয়া সম্প্রদায় হুসাইন রাঃ এর শাহাদাতের দিনকে মাতমের দিন ভানিয়ে নিয়েছে।
অথচ ইচ্ছাকৃত ভাবে মসিবতের দিনকে স্মরণ করতে থাকা এবং আহাজারি ও কান্নাকাটি করা শরিয়তে নিষিদ্ধ।
শরিয়ত তো তিন দিনের বেশি সোক পালন করা নিষিদ্ধ করেছে।
শুধুমাত্র স্ত্রীর জন্য তার,স্বামীর ইন্তেকালে ইদ্দত সমাপ্ত হওয়া পর্যন্ত শোক পালনের অনুমতি দিয়েছে।
শিয়ারা তাদের মাতম জলসায় সেই সব কাজই করে যা হাদিসে পরিষ্কার নিষেধ করা হয়েছে।
নবিজী স.এর উম্মতকে মবে রাখতে হবে, তারা যদি শিয়াদের সাথে এই সব হারাম কাজে যোগ দেয়,তাহলে উম্মতের কাতার থেকে বের হয়ে যাবে।
কারণ হুসাইন রাঃ এর শাহাদাত এর তিনশোবছর পর্যন্ত এরুপ মাতম করার রেওয়াজ ছিল না।
তার শাহাদাতের তিনশো বছর পর এটি আবিষ্কার করে শিয়াদেরই একজন মাঈযুদ দাওলা দাইলামী।
তাই এই দিনে মাতম করা,তাজিয়া তৈরি করা,বুক চাপরানো,শোক মিছিল করা ইত্যাদি সম্পূর্ণ হারাম এবং ঈমান ধ্বংসী কাজ। তা,আমাদের অবশ্যই পরিহার করে চলতে হবে।
আশোরার দিনের বানোয়াট গল্প কাহিনি
আশুরার দিন সম্পর্কে এমন কতিপয় বানোয়াট গল্প-কাহিনি বর্ণনা করা,যা সহিহ ও নির্ভর্যোগ্য রেওয়ায়েতে পাওয়া যায় না।
যেমনঃ আশুরার দিন কিয়ামত সংঘটিত হওয়া,ঈসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্ম এই দিনে হওয়া, ইত্যাদি।
আশুরার দিনে কেবল ২টি ঘটনার বর্ননা পাওয়া যায়। ১/ মুসা আঃ এর নীলনদ পার হওয়া ২/ ফেরআউন তার দল সহ ধ্বংস হওয়া। (বুখারি মুসলিম?)