(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
লিখেছেন: হাফিজ মাওলানা লুকমান হাকিম
ইমানের শাখাসমুহ
ইমানের সকল শাখা তিন প্রকারে বিভক্ত:-
প্রথম প্রকার: যার সম্পর্ক হলো নিয়ত, বিশ্বাস ও অন্তরের আমলের সাথে। তার শাখা ৩০টি।
দ্বিতীয় প্রকার: যার সম্পর্ক হলো যবানের সাথে। তার শাখা ৭টি।
তৃতীয় প্রকার: যার সম্পর্ক হলো শরীরের অবশিষ্ট অঙ্গের সাথে। তার শাখা ৪০টি।
প্রথম প্রকার:-
এর মধ্যে মোট ৩০টি শাখা রয়েছে:-
১/ আল্লাহ পাকের উপর ইমান আনা।২/ আল্লাহ তায়ালা ছাড়া সব কিছু পরবর্তিতে সৃষ্টি হয়েছে একমাত্র তিনিই অনন্তকাল হতে আছেন।
৩/ ফেরেশতাদের প্রতি ইমান আনা।৪/ আসমানী কিতাবসমুহের প্রতি ইমান আনা।৫/ আল্লাহর প্রেরিত সকল পয়গাম্বরের প্রতি ইমান আনা।
৬/ তাকদীরের উপর ইমান আনা।৭/ কিয়ামত দিবসের প্রতি ইমান আনা।৮/ জান্নাতের উপর ইমান আনা।
৯/ জাহান্নামের উপর ইমান আনা।১০/ আল্লাহর সহিত মহব্বত রাখা।১১/ কাহারো সহিত আল্লাহর জন্য মহব্বত রাখা এবং আল্লাহর জন্যই কাহারো সহিত দুশমনি রাখা।
১২/ রাসুল সা. এর সহিত মহব্বত রাখা।১৩/ সকল নেক আমল ইখলাসের সাথে করা।১৪/ তাওবা অর্থাৎ কৃত গুনাহের উপর লজ্জিত হওয়া।
১৫/ আল্লাহ তা'য়ালাকে ভয় করা।১৬/ আল্লাহর রহমতের আশা করা।১৭/ আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হওয়া।
১৮/ আল্লাহর শোকর করা।১৯/ ওয়াদা পূর্ণ করা।২০/ সবর করা।২১/ বিনয়-নম্রতা। এর মধ্যে বড়দের সম্মান করাও শামিল।
২২/ স্নেহ-দয়া। ছোটদের স্নেহ করাও ইহার মধ্যে শামিল।২৩/ তাকদিরের উপর সন্তষ্ট থাকা।২৪/ তাওয়াক্কুল তথা আল্লাহর উপর ভরসা করা।
২৫/ আত্নগর্ব ত্যাগ করা।২৬/ হিংসা বিদ্বেষ না রাখা।২৭/ হায়া তথা লজ্জা করা।২৮/ রাগ না রাখা।২৯/ ধোকা না দেওয়া।
৩০/ দুনিয়ার মহব্বত দিল থেকে বাহির করে দেওয়া।
দ্বিতীয় প্রকার:-
যবানের আমল:
এর মধ্যে মোট ৭টি শাখা রয়েছে:-
১/ কালেমায়ে তাইয়্যেবা পড়া। ২/ কুরআন শরীফ তেলাওয়াত করা। ৩/ দ্বীনি ইলম শিক্ষা করা। ৪/ অন্যদেরকে দ্বীনি ইলম শিক্ষা দেওয়া।
৫/ দোয়া করা। ৬/ আল্লাহর যিকির করা। ইস্তেগফারও এর অন্তর্ভূক্ত। ৭/ অনর্থক কথা না বলা।
তৃতীয় প্রকার:-
অন্যান্য অঙ্গের আমল
এর মধ্যে মোট ৪০টি শাখা রয়েছে।
যা তিন ভাগে বিভক্ত
প্রথম ভাগ
এই শাখাসমুহ নিজের সাথে সম্পৃক্ত। ইহার ১৬ টি শাখা।
১/ পবিত্রতা হাসিল করা। তথা শরীর, পোশাক, জায়গা পবিত্র রাখা। ২/ নামাজের পাবন্দি করা। ফরজ, ওয়াজিব, নফল,
কাজা সকল প্রকার নামাজ ইহার অন্তর্ভূক্ত। ৩/ সদকা করা। যাকাত, ফিতরা এর অন্তর্ভূক্ত। ৪/ ফরজ, নফল সকল প্রকার রোযা রাখা।
৫/ হজ করা। ফরজ, নফল, ওমরা এর অন্তর্ভূক্ত। ৬/ ইতেকাফ করা। শবে কদর তালাশ করাও ইহার অন্তর্ভূক্ত।
৭/ দ্বীনের হেফাজত করার জন্য বাড়ী ঘর ত্যাগ করা। ৮/মান্নত পুরা করা ৯/ কছম খাইলে উহার হেফাজত করা।
১০/ কাফ্ফারা আদায় করা। ১১/ নামায অবস্হায় অথবা নামাযের বাহিরে সতর ঢাকিয়া রাখা। ১২/ কুরবানী করা।
১৩/ জানাযার নামাযে শরীক হওয়া। ১৪/ কর্জ পরিশোধ করা। ১৫/ লেনদেন শরীয়ত মোতাবেক করা। সূদ হতে বেচে থাকা।
১৬/ হকের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া। সত্য গোপন না করা।
দ্বিতীয় ভাগ
অন্যের সহিত আচার ব্যবহার সম্পর্কিত
ইহার ৬টি শাখা।
১/ বিবাহের দ্বারা হারাম হতে বাঁচা। ২/ পরিবার পরিজনের হকের প্রতি খেয়াল রাখা। ৩/ মাতা পিতার সহিত সদ্ব্যবহার করা।
৪/ সন্তান সন্ততির সুশিক্ষার ব্যবস্সা করা। ৫/ আত্নীয় স্বজনদের সহিত সুসম্পর্ক রাখা। ৬/ বড়দের অনুগত হওয়া ও কথা মেনে চলা।
তৃতীয় ভাগ
সাধারণ হক সম্পর্কিত
ইহার ১৮টি শাখা।
১/ ইনসাফের সহিত শাসন করা। ২/ হক্কানী জামাতের সহিত থাকা। ৩/ শাসনকর্তার অনুগত হয়ে চলা; যদি শরীয়ত বিরোধী কোন হুকুম না হয়।
৪/ পারস্পরিক বিষয়সমুহ সংশোধন করা। ফাসাদ সৃষ্টিকারীদেরকে শাস্তি দেওয়া। ৫/ নেক কাজে অন্যকে সহযোগিতা করা।
৬/ নেক কাজের আদেশ করা, অন্যায় কাজের নিষেধ করা। ওয়াজ করা, তাবলিগ করাও এর অন্তর্ভূক্ত।
৭/ হদ তথা শরিয়তের নির্ধারিত শাস্তির বিধান কায়েম করা। ৮/ জিহাদ করা। সীমান্ত রক্ষা করাও এর অন্তর্ভূক্ত।
৯/ আমানত আদায় করা। ১০/ কর্জ প্রদান করা ও পরিশোধ করা। ১১/ প্রতিবেশির হক আদায় করা।১২/ লেনদেন সঠিকভাবে করা।
১৩/ সম্পদ উপযুক্ত স্থানে খরচ করা। ১৪/ সালাম করা ও সালামের উত্তর প্রদান করা। ১৫/ কেহ হাচিঁ দিলে এর জবাবে “ইয়ারহামুকাল্লাহ” বলা।
১৬/ দুনিয়াবাসির সাথে ক্ষতিকারক ও কষ্টদায়ক আচরণ না করা। ১৭/ বেহুদা কাজ ও খেলতামাশা হতে বিরত থাকা।
১৮/ রাস্তা হতে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা।
(সুত্র: উমদাতুলকারী, ফতহুলবারী, মেরকাত।)
আরও পড়ুন:-