Breaking News
Home / তাওহীদ / ঈমান কী

ঈমান কী

(বিডি২৪ডটকম)

ঈমান কী

“ঈমান” একটি আরবি শব্দ তার বাংলা প্রতিশব্দ হলো “বিশ্বা করা”। অথবা এভাবেও বলা যায় যে, কারো নির্ভরযোগ্যতা ও বিশ্বস্ততার ভিত্তিতে তার

কথাকে সত্য বলে মেনে নেওয়া। ইসলামিক পরিভাষায় ঈমানের মূল তথ্য হচ্ছে এইযে, আল্লাহর রাসূলগণ আমাদের ইন্দ্রিয়ানুভূতি শক্তির ঊর্ধ্বে যে

সকল বিষয়ের কথা বলেন এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁরা যে হেদায়াত ও জ্ঞান নিয়ে এসেছেন সেগুলো বাস্তব মনে করে বিশ্বাস করে নেওয়া ও

মেনে নেওয়া। ঈমানের পারিভাষিক অর্থের মূলত অদৃশ্য বিষয়াবলির সাথেই হয়ে থাকে, যেগুলো আমরা নিজেদের অনুভূতি শক্তি ;যেমন

নাক,কান,জিহবা,হাত ইত্যাদি দ্বারা বুঝতে পারিনা। উদাহরণস্বরুপ মহান আল্লাহর গুণাবলী, তাঁর বিধি-বিধান, নবী-রাসূলগণের রেসালত এবং তাদের প্রতি

ওহী অবতরণ, সৃষ্টির সূচনা, পুনরুত্থান তাদের বর্ণনা ইত্যাদি ইত্যাদি। এই ধরনের যে সকল বিষয় আল্লাহর রাসূলগণ বর্ণনা করেন এগুলোকে

তাদের বিশ্বস্ততার ভরসায় সত্য মনে করে নেওয়ার নামই শরীয়তের পরিভাষায় ঈমান।
তার বিপরীতে রাসূলগণের বর্ণিত এধরনের

যেকোনো একটি বিষয়কে অস্বীকার করা অথবা তাকে সত্য বলে বিশ্বাস না করাই হচ্ছে তাদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা। যা মানুষকে ঈমানের গণ্ডি

থেকে বের করে দিয়ে কুফরের সীমানায় পৌঁছে দেয়। তাই একজন মানুষের মুমিন হওয়ার জন্য আল্লাহর রাসূলগণ কর্তৃক আনীত সকল বিষয়কে

সত্য বলে স্বীকার করে নেওয়া জরুরি।
তবে সকল বিষয়ের বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানা জরুরী নয় বরং ঈমানের জন্য সংক্ষিপ্ত সার বিশ্বাসই

যথেষ্ট।
তবে কিছু বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক বিষয় এমন রয়েছে যে, ঈমানের সীমানায় প্রবেশ করার জন্য

এগুলো নিরূপণ করা ও তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা জরুরি।
মুসলিম শরীফের থেকে বর্ণিত

হাদিস রয়েছে যে,এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সা. কে জিজ্ঞাসা করল: আমাকে বলুন ঈমান কী?
তিনি উত্তর দিলেন: ঈমান হচ্ছে এই যে, তুমি

আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাবের প্রতি, তাঁর নবী-রাসুলগণের প্রতি, শেষ দিবস কেয়ামতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে অর্থাৎ

এগুলোকে সত্য বলে জানবে ও মানবে। আর প্রত্যেক ভালো-মন্দ বিষয়কে তাকদীরের লিখনি বলে মেনে নিবে।

ঈমান সংক্রান্ত বিষয়াবলির মধ্যে এগুলোই হচ্ছে মৌলিক ও বুনিয়াদি বিষয়ে। আর এগুলোর উপর নির্দিষ্টভাবে নিরূপণ করে ঈমান পোষণ করা

জরুরি। এজন্যই রাসূলুল্লাহ সা. স্পষ্টভাবে এবং নির্দিষ্ট করে এগুলো উল্লেখ করেছেন।
পবিত্র কুরআনে ঈমান সংক্রান্ত বিষয়গুলো এই

ক্রমধারায়ই নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ার শেষ রুকুতে ইরশাদ হয়েছে: রাসুলের ঐ সমস্ত বিষয়ের প্রতি ঈমান আনা জরুরি যা তাঁর

পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং সকল মুমিনগনও। সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর

কিতাব সমূহের প্রতি এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি।
সূরা নিসায় ইরশাদ হয়েছে:যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাব সমূহের

প্রতি, তাঁর রাসুলগণের প্রতি এবং শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেনা ; সে পথ ভ্রষ্ট হয় বহু দূরে গিয়ে পড়বে।

আসুন এবার সংক্ষিপ্তভাবে জেনে নেই এই বিষয়গুলোর প্রতি ঈমান আনার অর্থ কি।

আল্লাহর উপর ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে 

এ বিশ্বাস পোষণ করা যে, তিনি বর্তমান, তিনি একক ও শরিকবিহীন তিনি সকলের সৃষ্টিকর্তা ও বিশ্বজগতের প্রতিপালক,

তিনি সকল অক্ষমতা ওদুর্বলতা থেকে মুক্ত এবং তিনি সকল গুণের আধার।

ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে 

সৃষ্টি জগতের মধ্যে তাদেরকে একটি বিশেষ শ্রেণীহিসেবে তাদের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করা এবং এই বিশ্বাস পোষণ করা যে,

তাঁরা এক পবিত্র ও সম্মানিত সৃষ্টি! এর মধ্যে কোনো মন্দ দিক, কোনো

প্রকার দুষ্টুমি ও অবাধ্যতার উপাদান নেই। বরং তাদের কাজই হচ্ছে আল্লাহর আনুগত্য ও নির্দেশ পালন করা।

তাদের দায়িত্বে অনেক কাজ ও দায়িত্বরয়েছে, যেগুলো তারা সুন্দরভাবে সম্পাদন করে থাকেন।

 

আল্লাহর কিতাব সমূহের উপর ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে

 

এ কথা বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ তা'আলা তাঁর রাসূলগণের মাধ্যমে মানব জাতির হেদায়েতের জন্য বিভিন্ন সময়ে পথনির্দেশিকা গ্রন্থসমূহ প্রেরণ করেছেন।

 

এগুলোর মধ্যে সর্বশেষ গ্রন্থ হচ্ছে কুরআন শরীফ, যা পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহের সত্যায়নকারী।

 

আল্লাহর রাসূলগণের উপর ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে

এই বাস্তব সত্যকে বিশ্বাস করে নেওয়া যে, আল্লাহ তা'য়ালা আপন বান্দাদের হেদায়েত ও পথ প্রদর্শনের জন্য,

 

যুগে যুগে বিভিন্ন অঞ্চলে তার নির্বাচিত বান্দাদেরকে নিজ সন্তুষ্টি অর্জনের নীতিমালা দিয়ে প্রেরণ করেছেন।

 

এবং তাঁরা অত্যন্ত বিশ্বস্ততার সাথে আল্লাহর বান্দাদেরকে তাঁর পয়গাম পৌঁছে দিয়েছেন। তারা মানব জাতিকে সঠিক পথে আনার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা সাধনা করেছেন।

 

এসকল নবী-রাসূলগণ আল্লাহর নির্বাচিত, প্রিয় ও সত্যের প্রতীক ছিলেন।

 

 

আখিরাতের প্রতি ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে

 

এই বাস্তব সত্যকে স্বীকার করে নেওয়া যে, এই দুনিয়াকে একদিন অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস করে দেওয়া

 

আর আল্লাহ তা'য়ালা তাঁর বিশেষ কুদরতে সকল মৃত প্রাণীকে পুনরায় জীবন দান করবেন এবং এখানে যে যেমন কর্ম করেছে,

সেঅনুযায়ী তাদেরকে সেখানে শাস্তি অথবা শান্তি দেওয়া হবে।

 

তাকদীরের প্রতি ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে

এই কথার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা ও স্বীকার করে নেওয়া যে,

 

পৃথিবীতে যা কিছু ঘটছে তা ভালোই হোক আর মন্দই হোক এসব আল্লাহর নির্দেশ ওতাঁর য় হচ্ছে!

 

এগুলোর ফায়সালা তিনি পূর্বেই করে রেখেছেন। এমন নয় যে তিনি অন্য একটা কিছু করার ইচ্ছা করছেন আর পৃথিবী নামক এই

কারখানা তার ইচ্ছার বিপরীতে চলছে! এমন করলে আল্লাহ তা'লার চরম অপারগতা ও অক্ষমতা মেনে নিতে হয়। যা ঈমানের পরিপন্থ।

আরো পড়ুন  ইসলাম কী, ঈমান কী,
ঈমান ভঙ্গের কারণসমূহ, ঈমান অতিশয় মহা মূল্যবান সম্পদ, জীবনের ক্রিয়া-কর্মের উপর ঈমানের প্রভাব, আমাকে অধিক ভালবাসতে না পারলে পূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না!

About মুহাম্মদ আবদুল্লাহ

আমি মাওলানা মোঃ আব্দুল্লাহ। 15ই এপ্রিল 1994 ঈসায়ি রোজ শুক্রবার মৌলভীবাজার জেলার হামরকোনায়( দাউদপুর) জন্মগ্রহণ করি। শিক্ষা জীবনের শুরুটা প্রাথমিক বিদ্যালয় দিয়ে হলেও 4 বছরের মাথায় ইসলামিক শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে নিজ উদ্যোগে মাদ্রাসায় ভর্তি হই! আলহামদুলিল্লাহ! সর্বশেষ 2017 ঈসায়ি কওমি মাদ্রাসার উচ্চতর ডিগ্রী মাস্টার্স (দাওরায়ে হাদিস) হযরত শাহ সুলতান রহ. মাদ্রাসা থেকে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল ক্বওমিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করি! নিজে যা কিছু জেনেছি তা লিখনীর মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে এবং আমৃত্যু ইসলাম ও মানবতার সম্পর্কে জানতে ও জানাতে এই সাইটের সাথে সংযুক্ত হয়েছি! আল্লাহ আমাকে ও সবাইকে কবুল করুন।আমিন!!!

Check Also

ঈমানের পরিচয় ও তাঁর প্রকার

ঈমানের পরিচয়

ঈমানের পরিচয় ও তাঁর প্রকার  ১ম পর্ব ১ .ঈমানের আভিধানিক অর্থ বিশ্বাস ও সত্যায়ন করা,যেমন …

Powered by

Hosted By ShareWebHost