(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
بسم الله الرحمن الرحيم
সন্তান আমাদের হৃদয়ছেড়া অংশ। দুনিয়ার জীবনে আমাদের জীবনের সর্বস্ব সন্তানের ভালোবাসার জন্য বিলিয়ে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করি না।
কিন্তু আমাদের এ সন্তান যখন নষ্ট হয়ে যায় তখন আর আমাদের কষ্টের সীমা থাকে না।
সমাজে প্রতিনিয়ত যে কিশোর অপরাধ সহ তরুণদের দ্বারা বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে
এর প্রধান কারণ সন্তানদের ইসলামি বিধি-বিধান অনুযায়ী প্রতিপালন না করা
আমার আপনার সন্তান দুনিয়ার জীবনে মানুষের মতো মানুষ হয়ে আখিরাতে কামিয়াব হতে এজন্য ইসলাম সুস্পষ্টরূপে বিধান দিয়েছে।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা নিজেদেরকে
এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে রক্ষা কর অগ্নি হতে(সুরা তাহরীম, আয়াত ৮)
এই আয়াতের তাফসীরে বলা হয়েছে
আয়াতে সাধারণ মুসলিমদেরকে বলা হয়েছে, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে রক্ষা কর।
অতঃপর জাহান্নামের অগ্নির ভয়াবহতা উল্লেখ করে অবশেষে এ কথাও বলা হয়েছে যে, যারা জাহান্নামের যোগ্য পাত্র হবে,
তারা কোন শক্তি, দলবল, খোশামোদ অথবা ঘুষের মাধ্যমে জাহান্নামে নিয়োজিত কঠোরপ্রাণ ফেরেশতাদের কবল থেকে আত্মরক্ষা করতে সক্ষম হবে না।
এই ফেরেশতাদের নাম যাবানিয়া'। এ আয়াত থেকে প্রকাশ পায় যে,
আল্লাহর আযাব থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য প্রচেষ্টা চালানোর মধ্যেই কোন মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য সীমাবদ্ধ নয়।
বরং যে পরিবারটির নেতৃত্বের বোঝা তার কাঁধে স্থাপন করেছে,
তার সদস্যরা যাতে আল্লাহর প্রিয় মানুষরূপে গড়ে উঠতে পারে সাধ্যমত সে শিক্ষা দেয়াও তার কাজ।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন
“তোমরা প্রত্যেকেই রাখাল বা দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককেই তার অধীনস্থ লোকদের সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।
শাসকও রাখাল বা দায়িত্বশীল, তাকে তার অধীনস্থ লোকদের ব্যাপারে জবাবদিহি করতে হবে।
নারী তার স্বামীর বাড়ী এবং তার সন্তান-সন্ততির তত্ত্বাবধায়িকা, তাকে তাদের ব্যাপারে জবাবদিহি করতে হবে।” [বুখারী: ৮৯৩, ৫১৮৮]
[২] এর উপায় এই যে, আল্লাহ তা'আলা তোমাদেরকে যেসব কাজ করতে নিষেধ করেছেন,
তোমরা তাদেরকে সেসব কাজ করতে নিষেধ কর এবং যেসব কাজ করতে আদেশ করেছেন,
তোমরা পরিবার-পরিজনকেও সেগুলো করতে আদেশ কর।
এই কর্মপন্থা তাদেরকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে রক্ষা করতে পারবে। [ইবনে কাসীর]
হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আল্লাহ্ ঐ ব্যক্তিকে রহমত করুন, যে নিজে রাতে সালাত আদায় করতে দাঁড়িয়েছে,
এবং তার স্ত্রীকে জাগিয়েছে, সে যদি দাঁড়াতে অস্বীকার করে তার মুখে পানি ছিটিয়েছে।
আল্লাহ ঐ মহিলাকেও রহমত করুন যে, নিজে রাতে সালাত আদায় করতে দাঁড়িয়েছে
এবং তার স্বামীকে জাগিয়েছে, যদি সে দাঁড়াতে অস্বীকার করে তার মুখে পানি ছিটিয়েছে।”
[আবু দাউদ: ১৪৫০, ইবনে মাজা: ১৩৩৬]
হাদীসে আরও এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে সালাতের জন্য সাত বছর বয়সে পৌছলেই নির্দেশ দাও,আর তাদেরকে দশ বছর হলে এর জন্য দণ্ড দাও।
আর তাদের শোয়ার জায়গা পৃথক করে দাও। [আবু দাউদ: ৪৯৫, মুসনাদে আহমাদ: ২/১৮০]
অনুরূপভাবে পরিবার পরিজনকে সালাতের সময়, সাওমের সময় হলে স্মরণ করিয়ে দেয়াও এর অন্তর্ভুক্ত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখনই বিতর পড়তেন তখনি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে ডাকতেন এবং বলতেন,
“হে আয়েশা! দাঁড়াও এবং বিতর আদায় কর।” [সহীহ মুসলিম, ৭৪৪, মুসনাদে আহমাদ: ৬/১৫২](তাফসীরে যাকারিয়া)
ছোটবেলা থেকে বাবারা সন্তানদের মসজিদে নিয়ে আসবেন।
নবীরাসুল সাহাবীদের জীবনীর শিক্ষণীয় ঘটনা তাদের মাঝে আলোচনা করে শুনাতে হবে।
অনেক বাবা-মাই এই ভুল করেন সন্তানকে শৈশবে ইসলামের শিক্ষা দেন না।
পরবর্তী সময়ে বড় হয়ে গেলে সন্তানকে হাজার চেষ্টা করেও ইসলামের বিধানের দিকে মনোযোগী করা যায় না।
কেননা সন্তানের শৈশবের শিক্ষাটা হচ্ছে কাদামাটির মতো এইসময়ে তাদের যেভাবেই গড়ে তোলা হয় ভবিষ্যৎ এ এভাবেই গড়ে উঠে।
অসৎ বন্ধুবান্ধবের পাল্লায় পড়ে আমাদের ছেলেমেয়েরা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
তাই কখন কার সাথে আমার আপনার সন্তান মিশছে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
স্মার্টফোনের ব্যবহার আমাদের দেশে কিশোর-কিশোরীদের হাতে লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে
আমাদের তরুণ প্রজন্ম নষ্ট হওয়ার একটি কারণ স্মার্টফোন।
তাই আমাদের সন্তানেরা কমপক্ষে এইচএসসি/আলিম পাশ করার আগে তাদের হাতে স্মার্টফোন দেয়া যাবে না।
দিলেও কখন কীভাবে স্মার্টফোনের ব্যবহার করছে সেদিকে নজর রাখতে হবে কঠোরভাবে।
উৎসঃ মাসিক আদর্শ নারী
আড়ো পড়ুন
দাজ্জাল আসার তেরোটি আলামত,আপনার সন্তানকে মাদ্রাসায় দিলে যে লাভ হবে,মানুষের অবয়ব দিয়ে তৈরি রোবট জায়েয হবে কি না,