(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
بسم الله الرحمن الرحيم
নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর-দিঘী আর হাওড় এর সবই যেন আমার জন্মভূমি বাংলার সুনালী ভূষণ। বঙ্গভূমির সবুজ-শ্যামল প্রকৃতি মূলত এসব জলাশয়েরই দান।
বাংলার জনপদগুলো এসকল জলাশয়ের সুবিধাজনক তীরেই সর্বপ্রথম গড়ে উঠে। পাহাড়, বস্তির চেয়ে নদীপাড়ের বসতি গুলোই অধিক পুরনো।
নদী আর নদীসম জলাশয়গুলোর অপার দান মাছ এবং ফসলের আশায় তীরবর্তী মানুষগুলো বর্ষায় সংগ্রাম করে টিকে থাকে বেসামাল জলরাশির সাথে।
শুকনো মৌসুমেও বাঙ্গালীদের সংগ্রাম থেমে যায়নি। পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর জেগে উঠা জমিগুলোতে ধানের চারা রূপণে ব্যস্ত হয়েপড়ে সবাই।
পেঠের দায়ে সকল কষ্ট তুচ্ছ করে কৃষকরা চাষ করতে যায় দূর থেকে দূরের এলাকায়। এভাবে যখন ফসল কাটার সময় আসে তখন সবাই ঝাপিয়ে পড়ে ফসলের ক্ষেতে। অ
মেহনতের মাধ্যমে ফসল এনে শেষপর্যন্ত ঘর-ঘাট লাগায়। এভাবে বাঙ্গালীরা হয়ে উঠে বিরাট সংগ্রামী ও কষ্ট সহিষ্ণু জাতি। শত কষ্টের মাঝেও তারা খুঁজে বেড়ায় সর্গীয় সুখ।
হাওড়-বিলে বর্ষায় মাঝিমাল্লারা পাল উড়িয়ে নৌকা ছেড়ে দেয় বাতাসের ভায়ে। গান গায়,বাঁশী বাঝায় আর মনের আনন্দে মৎস শীকার করে।
এদিকে অসীম জলাশয়ে ভেসে থাকা জনপদগুলোতে পল্লি মাইয়ারা ব্যস্ত হয়েপড়ে নানা জাতের পিঠা তৈরীতে। সেই সাথে কুটির শীল্পেও ওরা মনযোগ দিতে কম করে না।
বর্ষাতেই বাংলার ভাটিয়ালি এলাকাতে বিবাহ অনুষ্ঠান অন্য সময়ের তুলনায় বেশী হয়। কনে আর বরযাত্রীদের তখন নৌকায় নিয়ে যাওয়া হয় গন্তব্যের দিকে।
বর্ষার নানান উৎসবে তখন জেগে উঠে ভাটিয়ালী নিরব পল্লিগুলো। বিশাল হাওড়ের মাঝে যখন মাঝিরা নৌকা নিয়ে দিগন্তের দিকে ছুটে চলে তখন পেঠে ভুকা মূর্খ মাঝিও হয়ে
উঠে বাউল গানের গানোওয়াল। সেও গায়, ” মনমাঝিরে, তর বইঠা নেরে আমি আর বাইতে পারলাম না।” দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসা অতিতি পাখিরা মনের আনন্দে যখন
হাওড়-বিলের জলে নানা কণ্ঠে মাতিয়ে উঠে আর সাঁতার কাটে তখন যেন আলাদা এক মেলার আসর বসেছে বলে মনে হয়।
এভাবে বাংলার মাটি নানান বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ হেয়ে করেছে বাংলার মানুষকে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত।
তাইতো কাদা-পানি আর সবুজ-শ্যমল সরল পকৃতির মতো এদেশের মানুষগুলোও অতি সহজ ভাবে কাটায় তাদের যাপিত জীবন।