(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
بسم الله الرحمن الرحيم
১৭-৪-২০২০ তারিখে গিয়েছিলাম গহরপুরেরএকটি হাওড় ভ্রমণে।
চারদিকে দৃষ্টিসীমা যেখানে শেষ সেখানটাতেওদেখা যায় শুধু ফসলের বিস্তীর্ণ খেত। বিশাল এ প্রান্তটি হাকালুকি হাওড়ের অংশ বলে প্রবিনদের কাছ থেকে জানা গেছে।
শীত ও গ্রীষ্মে এ অঞ্চলটি শুকিয়ে গেলেও বর্ষায় তা তলিয়ে যায় পানির গভীরে।
তখন এলাকাটি অসীম সমুদ্র রূপে আত্ম প্রকাশ করে। এরি মাঝ বরাবর রয়েছে বয়স্ক একটি বৃক্ষটি।
সিলেটিরা এ জাতের বৃক্ষকে করচ বৃক্ষ বললেও স্থানিয়রা এ গাছটিকে বলে গোয়াল মারার গাছ।
বর্ষায় মৎস শিকারীরা নায়ে চড়ে এ গাছটিতে বসে বুওয়াল শিকার করত বলে তারা এ নাম দেয়।
মূলের উপর দাঁড়িয়ে এক কান্ডে উপরের দিকে কিছু দূর এগিয়ে বহু শাখে বিভক্ত হয়ে চতুর্দিকে ছড়িয়ে গেছে গাছের উপশাখাগুলো।
এক কালে গাছটিকে আশ্রয় করে অসংখ্য রাখালের গল্প, কিচ্ছা, গান আর বাঁশীর সুরে মুখরিত হয়ে থাকত পড়ন্ত বিকেল।
গ্রীষ্মের দুপুরে কৃষক আর রাখালদের অনেকে গাছটির তলায় কিংবা উপরের বড় বড়
ডালগুলোতে দেহ এলিয়ে দিয়ে শীতল করে নিত তপ্ত দেহ। কিন্তু কালের পরিক্রমা পেরিয়ে আজ এখানে কৃষদের আসা যাওয়া কিছুটা
থাকলেও নেই রাখালের কোন উপস্থিতি। তাই গাছটি তার আসল সৌন্দর্য হারিয়ে নিরব দাঁড়িয়ে আছে।
সৌন্দর্য হারিয়ে বসা গাছটি আজো যেন আশা নিয়ে চেয়ে আছে ফেলে যাওয়া রাখালদের পথে।
এরি কিছু দূরে উত্তর দক্ষিণে প্রলম্বিত হয়ে গেছে তেলি খাল। খালটির কিনারায় বিশাল মাঠ আজ খেলোয়াড়দের অভাবে
শূন্য পড়ে আছে। একসময় এখানে চলত বিভিন্ন জাতের খেলা। কিন্তু আজ এর কিছুই আর বাকি নেই।
আছে শুধু শূন্য মাঠটি অতীতের সাক্ষী হয়ে।
গোওয়াল মারার গাছ, তেলি খাল আর তার পাশে পড়ে থাকা শূন্য মাঠের মতোঐতিহ্য হারিয়ে বিশ্রি পড়ে আছে বাংলার আরো কতো গাছ, মাঠ আর নদী।
এ হচ্ছে প্রকৃতির অকাল মরা। যান্ত্রিক যুগের নির্মম উপহাসের করালগ্রাস।
Tags গোওয়াল মারা তেলিখাল হাওড় হাকালুকি