Breaking News
Home / বিশ্লেষণ ও গবেষণামূলক / আধুনিক বিজ্ঞানের মূলে পবিত্র কুরআন

আধুনিক বিজ্ঞানের মূলে পবিত্র কুরআন

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম) 

 আধুনিক বিজ্ঞানের মূলে পবিত্র কুরআন

بسم الله الرحمن الرحيم

ইতিহাস অধ্যয়নে জানা যায়, ইসলাম আগমনপূর্বে বর্তমান বিজ্ঞানের অনেক শাখা আবিষ্কারই হয়নি।

কারণ, ঐ সবের ব্যাপারে তখন মানুষের ধারণাই জন্মায়নি।আর বিজ্ঞানের যে সব বিষয় তখনো আলোচনা ও গবেষাণায় উঠে এসেছিলো,

তাও আবার বিজ্ঞানীদের জ্ঞানস্বল্পতা হেতু যুক্তি ও বাস্তবতার মানচিত্রে স্থির হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।

সুতরাং বিজ্ঞান তখন ছিলো অনুন্নত ও অপরিপক্ষ। পবিত্র কোরআন নাযিল হওয়ার পর জুড়ে বিজ্ঞানের জোয়ার বইতে লাগলো। এর পেছনে ছিলো তিনটি কারণ।

   তঃ

কোরআনের প্রথম ,” তোমরা পড়ো!” ( সূরা আলাক, আয়াত : ১)

অর্থাৎ সকল অজ্ঞতা পরিহার করে ্জনের প্রতি কোরআন প্রথমেই জোর তাগিদ দিয়েছে।

এর কিছু পরেই শিক্ষাদর্শনের প্রতি মানুষের মনকে ধাবিত করা হয়েছে ।

বলা হয়েছে __” যিনি কলমের দ্বারা শিক্ষা দিয়েছেন ।”          ( সূরা আলাক, আয়াত : ৪)

আধুনিক বিজ্ঞানের মূলে পবিত্র কুরআন

এর পর অজানা জ্ঞান অর্জনের প্রতি মানুষের মনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।

বলা হয়েছে,__ মানুষকে তিনি এমন বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছেন, যা সে জানত না।” ( সূরা আলাক, আয়াত: ৫)

দ্বিতীয়তঃ

মানবজাতিকে গবেষণার প্রতি উৎসাহিত করে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে__

” অতএব হে চক্ষুষ্মানেরা, তোমরা গবেষণায় হও। ” (সূরা হাশর, আয়াত: ২)

এভাবে সৃষ্টি নিয়ে গবেষণাকারীদের কথা পবিত্র কোরআনে প্রশংসা-স্বরে এসেছে ।

এরশাদ হচ্ছে,__” যাঁরা দাঁড়িয়ে, ে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে,

এবং চিন্তা-গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টির বিষয়ে,(তারা বলে) পরওয়ার দেগার, এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি। “( সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯১)

পবিত্র কোরআনে শুধু গবেষণার নির্দেশ দিয়েই থেমে থাকেনি, বরং সাথে সাথে গবেষণার এমন সব বিষয়বস্তুও দান করেছে, যে ব্যাপারে মানুষ ছিলো একেবারে বেখবর

কোরআনের বিভিন্ন আয়াত বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার উপর ধারণা দিয়েছে ।

যেমনঃ কিছু আয়াত সৃষ্টিতত্ত্ব,কিছু আয়াত নৃতত্ত্ব, কিছু আয়াত জ্যৌতির্বিজ্ঞান, কিছু আয়াত পদার্থবিদ্যা,

কিছু আয়াত গণিত শাস্ত্র, কিছু আয়াত ভূতত্ব, কিছু আয়াত খনিজবিজ্ঞান, কিছু আয়াত জীববিদ্যা

, কিছু আয়াত উদ্ভিদবিজ্ঞান, কিছু আয়াত প্রাণিবিদ্যা,কিছু আয়াত কৃষিবিজ্ঞান,

কিছু আয়াত উদ্যানতত্ত্ব, কিছু আয়াত প্রত্নতত্ত্ব, কিছু আয়াত স্থাপত্যশিল্প-র ধারণা দিয়েছে ।

 তৃতীয়তঃ

পবিত্র কোরআন বলিষ্ঠ স্বরে নিজের বিজ্ঞানময়তার কথা স্বীকার করে বলে,” শপথ, বিজ্ঞানময় কোরআনের।”        (সূরা ইয়াসীন, আয়াত: ২)

    কোরআন যখন নিজেই বিজ্ঞানময় দাবী করে হাতে কলমে শিক্ষার্জনের জোর তাগিত দিলো,

এবং চিন্তা-ফিকির ও গবেষণার প্রতি কেবল অনুপ্রেরণা দিয়েই বসে থাকলো না,

বরং গবেষণার বিষয়বস্তুও মানুষের সামনে হাজির করলো তখন মুসলিম জ্ঞান-পিপাসুদের মধ্যে জন্ম নিলো নতুন এক শক্তিী প্রেরণার,

যে প্রেরণাবলে ঐ সব মুসলিম জ্ঞানতাপসরা প্রবল পিপাসুর ন্যায় পবিত্র কোরআনের দেওয়া জ্ঞানবিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে ও রহস্য উদঘাটন করতে

এরূপ ছুটতে লাগলেন ,ভ্রমর যেরূপ মধু অর্জনে পাগলপারার মত ছুটতে থাকে।

ফলে জ্ঞান-বিজ্ঞানে এমন একটি জাতির জন্ম হলো, যারা গোটা মানব সংস্কৃতি ও জ্ঞানের উপর আধিপত্য বিস্তার করে মানবেতিহাসের গতিই পরিবর্তন করে দিলো।

আধুনিক বিজ্ঞানের মূলে পবিত্র কুরআন

প্রবাহের সেই সূত্র ধরেই রসায়ন শাস্ত্রে আত্ম প্রাকাশ করলেন বিজ্ঞানী জাবির ইবনে হাইয়ান (৭২২-৮০৪ খ্রিঃ)।

গণিতশাস্ত্রে জন্ম হলো আল-খারিযমি (৭৮০-৮৫০ খ্রিঃ), আল-বাত্তানী (৮৫৮-৯২৯ খ্রিঃ),

তুসী, আল-সারাকাশী, আল-মাহদী, আল-বিরুণী (৯৭৩-১০১৮ খ্রিঃ) ওমর খৈয়াম (১০১৯-১১৩৫ খ্রিঃ) প্রমুখের।

ভূ-গোল শাস্ত্রে জন্ম হলো,- আল খারিযমী,ইবনে খরদাদ, আল-ইয়াকুবী, ইবনে রুশতাহ, আল-ইসতাখরী,

ইবনে হাওকাল, আল-মুকাদ্দাসী, আল-মাসূদী, আল-বিরুনী, আল-ইদ্রিসী, ইয়াকুত ইবনে আব্দুল্লাহ,ওমর খৈইয়াম প্রমুখ।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে আল-রাযি, , যাহরাবি, ইবনে হায়সাম, তাবারি,

ইবনে নাসিফ, ইবনে আব্বাস, ইবনে ঈসা, ইবনে রুশদ, আম্মার প্রমুখ বিজ্ঞনীদের।

এভাবে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায়ও তৈরী হন বড় বড় ব্যক্তিত্ব।

 অতএব

পবিত্র কোরআনের বদৌলতে আরব থেকে উৎসারিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের জোওয়ার গোটা পৃথিবীর উপর দিয়ে বইতে শুরু করলো।

তখন ভিনজাতি ও ভিনদেশীরা যারা এত দিন পর্যন্ত জ্ঞানজগতে উল্লেখযোগ্য কিছুই করতে পারেনি,

পাত্র পেতে ওরা এবার নড়েচড়ে বসলো। মনের ইচ্ছা মিটিয়ে মুসলিম জ্ঞান-সমুদ্র থেকে পাথেয় সংগ্রহ করল।

অতঃপর এর উপর ভিত্তি করে জ্ঞানজগতে তারাও স্থান খুঁজে নিল।

   এদিকে হলো কি!

কালের পরিক্রমা পেরিয়ে মুসলিমরা সেই জ্ঞান-বিজ্ঞান থেকে পিছিয়ে পড়লো।

মুসলিমরা যতই পিছু হটলো ওরা ততই স্থান দখল করে বসতে লাগলো।

এক পর্যায়ে এসে জ্ঞানরাজ্যে যে মুসলমানদের মুখ্য ভূমিকা ছিলো ওরা তা অস্বীকার করতে লাগলো।

মুসলমানদের নামনিশানা জ্ঞানেতিহাস থেকে পরিবর্তন পরিবর্ধন করে দিয়ে

ঐ জ্ঞানপাপিরা মুসলমানদেরকে পৃথিবীর কাছে অজ্ঞ, মুর্খ বলে প্রচার করতে লাগলো।

মুসলমানদের প্রতি তাদের হিংস্র ছোবল এত দূর পর্যন্ত গিয়ে গড়ালো

যা ভাষায় প্রাকাশ করতে দীর্ঘ পরিসরের প্রয়োজন। এখানে কিঞ্চিত আলোকপাত করছি ।

আধুনিক বিজ্ঞানের মূলে পবিত্র কুরআন

আলফ্রেড গুইম্যান, ডিব্যুয়ারসহ পাশ্চাত্যের বেশ কিছু দার্শনিক বরাবরই বলেছেন,__

” কোরআন তার অনুসারীদের নিকট থেকে

তার নীতিসমূহের অন্ধ আনুগত্য দাবী করে এবং স্বাধীন চিন্তার কোন সুযোগই দেয় না।

সুতরাং স্বাধীন চিন্তা মুসলিম দর্শনে কি ভাবে সম্ভব?”

বাস্তব বলতে কি, এ ভিত্তিহীন অভিযোগ, অভিযোগকারীদের কোরআন সম্পর্কে জ্ঞানের দীনতা প্রামাণ করে মাত্র।

কেননা, কোরআন কোন মানুষের অন্ধ আনুগত্য তো দাবি করেই না;

বরং প্রতিনিয়ত সে বিশ্বমানবকে সৃষ্টির রহস্য ও অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে নিবিড় গবেষণা করার প্রেরণা প্রদান করে।

কোরানে উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়েছে গবেষণার জন্য। এরশাদ হচ্ছে, __

” অতএব,হে চক্ষুষ্মানেরা, তোমরা গবেষণায় নিয়ত হও।” কোরআন করে জার্মান দার্শনিক ও কবি গ্যেটেল বলেন,__

” এটি যদি ইসলাম হয়, তবে আমাদের মধ্যে প্রত্যেক চিন্তাশীল ব্যক্তিই বাস্তবিক মুসলিম।”

সুতরাং বলা যায়, অন্ধ আনুগত্যের অভিযোগ সত্য নয়। যারা এ অভিযোগ তুলেছে,

তাদের ব্যাপারে এ প্রবাদই উপযোক্ত হয়, __” টিকটিকি বাতেসা নিন্দে অসতে নিন্দে সতী * মুর্খের দলে জ্ঞানী নিন্দে পরিনামে হবে যে কি গতী!”

About আবদুল্লাহ আফজাল

হাফিজ মাওঃ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আফজাল। ২০১২ সনে হিফজ সম্পন্ন করেন। উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন২০১৬ সনে। দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন ২০২০ সনে। ঠিকানা: বালাগঞ্জ, সিলেট। মোবাইল নাম্বার: 9696521460 ইমেইল:hafijafjal601@gmail.com সকল আপডেট পেতে এবং ওয়েবসাইটে লিখা পাঠাতে ফেসবুক পেজ👉MD AFJALツ ফলো করুন।

Check Also

হাদিয়া ও ঘুষের মধ্যে পার্থক্য কী?

(Muslimbd24.com) হাদিয়া ও ঘুষ এক নয়, হাদিয়া ও ঘুষের মধ্যে পার্থক্য বিরাট। হাদিয়া বা উপহার …

Powered by

Hosted By ShareWebHost