(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
بسم الله الرحمن الرحيم
আদর্শ ব্যক্তি সমাজ ও জাতির জন্য আশীর্বাদ।
আদর্শ ব্যক্তির অভাবে কতই না জাতি লীন হয়েছে পৃথিবীর ইতিহাস হতে,
আর কত হীন জাতিই না মহান ও আদর্শবান ব্যক্তির বদৌলতে সফলতার উচ্চাসনে উঠে এসেছে অস্তিত্বের মানচিত্রে।
যুগে যুগে মানবেতিহাস এর চাক্ষুস সাক্ষি। আদর্শ ব্যক্তিত্বের অভাবে জাতির পতনের দৃষ্য আমরা ভারতবর্ষে মুগল পতনের ইতিহাস,
আন্দোলুসে মুওয়াহ্হেদীদের পতনেতিহাস আর মিডিলে সালাহ উদ্দীন আইয়ূবী (র.) এর পরবর্তীদের ইতিহাস দেখতে পারি।
এবার জাতির উত্থানের উপমা দেখেন। এখানে আমরা ইয়াহইয়া বিন ইব্রাহীম আলগুদালীর নাম উল্লেখ করতে পারি।
যিনি জাতির সংস্কার চিন্তায় দগ্ধ এক মহা শাসক।
মুরাবিতি জাতি ও মুরাবিতি সামরাজ্য তাঁরই সংস্কার আন্দোলন-পরিক্রমার সুফল।
যারা ছিলো সুবিশাল সাহারা মরুভূমির প্রচণ্ড উষ্ণ ও অনুর্বর ওই গভীরতম এলাকা
যা মৌরিতানিয়ার দক্ষিণ অঞ্চলের আওতাধীন সেখানকার অধিবাসী।
যেখানে তাপমাত্রা অনেক বেশি, অধিবাসীগণ দক্ষ হাতে চাষাবাদ করতেও জানত না। তারা অভ্যস্ত বেদুইন জীবনযাপনে।
নৈতিক ও চারিত্রিক দিক দিয়ও তাদের অবস্থান ছিলো চরম নিকৃষ্টে।
সেই মুরাবিতিরা মূলতঃ আফ্রিকার আমাজিগ (বার্বার) জাতিগোষ্টীর এক বৃহৎ শাখাগোত্র,
যারা ‘সানহাজা' নামে পরিচিত, তাদেরই আদর্শিক রূপ।
ইয়াহইয়া বিন ইবরাহিম আলগুদালীর প্রচেষ্টায় সাহারার গহীনে দক্ষিণ দিকে
টিমবাকটের ( বর্তমানে আফ্রিকান রাষ্ট্র, মালির একটি শহর) নিকটে নাইজার নদীর বাঁকে অবস্থিত
এলাকার এক সাদামাটা তাঁবুতে তাদের অঙ্কুরোদগম।
যেই মুরাবিতিরা মাত্র এক তাঁবু পরিমান স্থান নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলো,
অবশেষে ওরা পুরো মৌরিতিনিয়া, মরুক্ষ, আলজেরিয়া ও তিউনিসিয়ার পুরো অঞ্চলের অধীকারী হয়ে উঠে।
এবং পৃথিবীর আদর্শ জাতিদের মধ্যে তাদের নাম সোনালি অক্ষরে অঙ্কিত হয়।
এমন মানুষ আমরা কি করে গড়তে পারি,
যে হবে দেশ ও জাতির আদর্শ, আশীর্বাদ এবং অনুসরণীয়?
এই প্রশ্নের আওতায় এসে আমরা দু' ভাগে বিভক্ত।
প্রথমত
ওরা, যারা ব্যক্তি গঠনের ফিকিরই করে না। উপরোক্ত প্রশ্ন হয়ত তাদের বিবেককে নাড়া দেবে।
দ্বিতীয়ত
এরা, যারা ব্যক্তি গঠনে চিন্তাশীল। প্রাগুক্ত প্রশ্নের জবাব তাদের বেলায় হয়ত মাইলফলক হবে।
আসোন জেনে নিই আদর্শ ব্যক্তি গঠনের প্রক্রিয়া
আদর্শ ব্যক্তি গঠনে যে বিষয়টি প্রয়োজন তাহলো ব্যক্তিত্বের আদর্শিকীকরণ।
ব্যক্তিত্বকে আদর্শিক রূপ দেওয়াই হলো, ব্যক্তিত্বের আদর্শিকীকরণ।
ব্যক্তিত্বকে আদর্শিক রূপ দিতে, আগে জানতে হবে ব্যক্তিত্ব কী?
সমাজজীবনে বহুল ব্যবহৃত একটি প্রত্যয় হলো, ব্যক্তিত্ব।
আমরা আগে তার শাব্দিক অর্থ জেনে নেব।
শাব্দিক অর্থে ব্যক্তিত্বঃ
ব্যক্তিত্বের ইংরেজী প্রতিশব্দ হলো, ‘personality ‘
এ শব্দটি আবার ল্যটিন শব্দ ‘ persona ‘ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে।
যার অর্থ, রঙ্গমঞ্চে সংলাপ বলা বা অভিনেতার ব্যবহৃত ‘মুখোশ'।
প্রাচীন কালে ব্যক্তিত্ব বলতে ব্যক্তির একটি ছদ্ম বা বিকৃত রূপকেই বুঝানো হতো।
কিন্তু আধুনিক সমাজ মনোবিজ্ঞানিগণ ব্যক্তিত্ব বলতে ব্যক্তির স্বরূপকেই বুঝিয়ে থাকেন।
ব্যক্তিত্বের সংঙ্গাঃ মনোবিজ্ঞানী গর্ডন আলপোর্ট ( Gordon Allport ),
গ্যারেট ( Garett ), হুইটটেকার (Whittaker), ক্রাইডারসহ আরো অনেকে ব্যক্তিত্বকে সংঙ্গায়ীত করেছেন।
এসব সংঙ্গা থেকে এই ফলাফল বের হয় যে, ” ব্যক্তিত্ব হলো, একটি বিমূর্ত বিষয় এবং মানুষের একটি বিশেষ সত্তা।
এ সত্তাটি ব্যক্তিমানুষের গুণ ও ক্রিয়ার সুসংহত উপস্থিতির ফল।
সমগ্র মানবকে ঘিরেই এ সত্তার সৃষ্টি। কার্যত এ সত্তাই প্রতিটি মানুষকে স্বাতন্ত্র্য প্রদান করে।
বস্তুত,ব্যক্তি মানুষের চেহারা, সামর্থ, আবেগ-অভিজ্ঞতা, মনোভাব, মূল্যবোধ, বিশ্বাস,
দৃষ্টিভঙ্গি, জ্ঞান-বুদ্ধি, দোষগুণ প্রভৃতি মিলেই হলো তার ব্যক্তিত্ব।
” অতএব, ব্যক্তিত্ব যদি তাই হয়, তবে এর ভিত্তিতে অবশ্যই এ কথা বলা চলে যে, ”
ব্যক্তিত্ব নিয়ে কোন মানুষ জন্ম গ্রহণ করে না।
” ব্যক্তিত্ব এমন একটি গুণ, যা জন্মের পর কতগুলো উপাদানের ভিত্তিতে গড়ে উঠে।
সুতরাং, যে সব উপাদানের ভিত্তিতে ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠে, একটি ব্যক্তিকে শিশুকাল থেকে নিয়ে উপযুক্ত হওয়া পর্যন্ত
তার সামনে যদি আমরা সেই উপাদানগুলোকে আদর্শময় করে পেশ করতে পারি
তাহলে তখনই ঘটবে ব্যক্তিত্বের আদর্শিকীকরণ।
আর ব্যক্তিত্বের আদর্শিকীকরণ ঘটলে জন্ম নেবে আদর্শ ব্যক্তিদের।
মনোবিজ্ঞানীরা ব্যক্তিত্ব গঠনের কতগুলো উপাদান চিহ্নিত করেন,
যেগুলোকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
(ক) জৈবিক উপাদান (খ) সামাজিক উপাদান।
জৈবিক উপাদানের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো কাজ করে তা হলো;
অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি, ক্রোমোসোমের প্রভাব ও জিন (রসায়নি পদার্থ) এর প্রভাব।
ব্যক্তিত্ব গঠনের জৈবিক এ উপাদানগুলোর আদর্শিকীকরণ ঘটে সন্তানের স্বাস্থের প্রতি যত্নবান হলে।
এবার সামাজিক উপাদানের কথা বলি
ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব গঠনে সামাজিক উপাদানগুলো তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রভাব বিস্তার করে।
সামাজিক উপাদান বলতে পরিবার, খেলার মাঠ, ধর্মীয় প্রতিতিষ্ঠান,
বিদ্যালয়, সংঘ-সমিতি, সংস্কৃতি ইত্যাদিকে বুঝায়।
নিম্নে এগুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা আদর্শিকীকরণের উপায়সহ দেয়া হলো।
১/ পরিবারঃ
সামাজিক উপাদানের প্রথম পর্যায় হলো পরিবার।
জন্মের পর শিশু পারিবারিক পরিবেশে মাতাপিতার সংস্পর্শে আসে।
মায়ের আদর, পিতার স্নেহ এবং ভাই-বোনের মমত্ববোধ শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশে সহায়তা করে।
পরিবার থেকেই শিশু সমাজের মূল্যবোধ, প্রথা, আচার-আচরণ ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা অর্জন করে।
পরিবারই ব্যক্তির অনানুষ্ঠানিক শিক্ষাঙ্গন।
পরিবারের স্নেহ-শাসনে ব্যক্তি শৈশবে যা শিখে তা তার জীবনকে মৌলভাবে প্রভাবিত করে।
বাবা-মায়ের অনাদর ও অবহেলা শিশুর ব্যক্তিত্বের বিকাশে বিঘ্ন ঘটায়।
মাত্রাতিরিক্ত আদর যেমন শিশুর জন্য ক্ষতিকর,
তেমনি কঠোর অনুশাসনও শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশে অন্তরায় হয়ে দাঁঠায়।
অতিরিক্ত শাসন শিশুর মনকে বিদ্রোহ করে তোলে।
এতে তার মধ্যে আক্রমণাত্মক মনোভাব দেখা দেয়।
যে পরিবারে শিশুর সাথে পিতামাতার সম্পর্ক মধুর এবং পারিবারিক পরিবেশ সৌহার্দপূর্ণ,
সে পরিবারে শিশুর ব্যক্তিত্ব সুন্দরভাবে বিকশিত হয়।
সন্তানকে আদর্শবান করে গড়তে পরিবারই প্রথম ও উপযুক্ত ক্ষেত্র।
তাই আদর্শ সন্তান গড়তে পরিবারকেই সর্বাগ্রে এগিয়ে আসতে হবে।
অন্ততপক্ষে সন্তানের খাতিরে পরিবাকে সকল অনৈতিক,অনিয়ম কর্মকাণ্ড থেকে ফিরে আসতে হবে।
সেই সাথে পরিবারে ওইসব গুণাববলীর সমাবেশ ঘটাতে হবে যেগুলো সন্তানের আদর্শ জীবন গড়নে ফলপ্রসূ হয়।
২/ খেলার মাঠঃ
পরিবারের নির্দিষ্ট ও সীমিত গণ্ডি পেরিয়ে শিশু খেলার মাঠে প্রতিবেশীদের সংস্পর্শে আসে।
খেলার মাঠে সঙ্গী-সাথী দ্বারাও সে প্রভাবিত হয়।
খেলার মাঠে সে নিজের পরিবার ছাড়াও বাইরের জগতের অস্তিত্ব অনুভব করে।
এ পর্যায়ে তার মধ্যে নেতৃত্ব, নিয়ম-শৃঙ্খলা, দায়িত্ব-কর্তব্য, সহনশীলতা ইত্যাদি গুণাবলীর সূচনা হয়।
খেলার মাঠ নামক ব্যক্তিত্বের এ উপাদানটি তখনই আদর্শময় হবে যখন খেলার বিষয়বস্তু হবে ন্যায়সঙ্গত আর খেলার সাথীরা হবে আদর্শবান।
৩/ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানঃ
যদিও শিশু পরিবার থেকেই নীতি, আদর্শ ইত্যাদি বিষয়ে সাধারণ ধারণা অর্জন করে
তথাপি আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যেমন- মক্তব, মসজিদ, মন্দির, গির্জা ইত্যাদিথেকে যে শিক্ষা গ্রহণ করেে
শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশে তার প্রভাব খুবই প্রগাড় এবং সুদূরপ্রসারী।
ধর্মীয় নেতা শিশুর কাছে আদর্শরূপে আবির্ভূত হন।
অতএব, ধর্মীয় শিক্ষক যখন ন্যায়-নিষ্ঠাবান ও আদর্শ মানব হবেন
তখনই শিশুর জন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নামক এ উপাদানটি আদর্শময় হবে।
৪/ জাগতিক শিক্ষাঃ
খেলার মাঠ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি জাগতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিশুর ব্যক্তিত্বে আনে বৈচিত্র।
পরিবারে রচিত হয় শিশুর ভিত, আর চূড়ান্ত আনুষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন শুরু হয়,
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার পর থেকে। শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশে শিক্ষকের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শিক্ষাঙ্গনে নিয়ম-শৃঙ্খলা, দায়িত্ব-কর্তব্য ছাড়াও এখান থেলে সে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা লাভ করে।
কেননা, সে বিভিন্ন শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীর সংস্পর্শে আসে, শিক্ষক, কর্মচারী-কর্মকর্তা ইত্যাদি ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্যে আসে।
বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও চিত্তবিনোদনমূলক অনুষ্ঠান-প্রতিষ্ঠান সম্পর্কেও জ্ঞান সঞ্চয় করে।
এ শিক্ষা তার দৃষ্টিভঙ্গি গঠন ও জীবনবোধ রূপায়ণে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা পালন করে।
ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব গঠনে তাই প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
জাগতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি, ব্যক্তিকে প্রথমে চেষ্টা করা একটি আদর্শময় শিক্ষা কেন্দ্রে ভর্তি করা।
আর না পারলে শিক্ষার্থীর উচিৎ হবে কোন এক আদর্শবান হিতাকাঙ্খী উপদেশকের উপদেশ মেনে শিক্ষাকর্ম চালিয়ে যাওয়া।
যাকে আমরা ত'লীমী জিম্মাদার বলতে পারি। তা'লীমী জিম্মাদার শিক্ষার্থীর জন্য সবসময় উপকারী।
৫/ সংঘ-সমিতিঃ
সংঘ-সমিতি ঐচ্ছিক সংগঠন। এগুলো গড়ে উঠে কোন উদ্দেশ্য সাধনের জন্য।
খেলাধুলা, সংগীত চর্চা, বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান ইত্যাদি সংঘ-সমিতির কাজের অন্তর্ভুক্ত।
এখানে ব্যক্তির পক্ষে তার স্বকীয়তা ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটানো সহজ হয়।
সংঘ-সমিতি ব্যক্তির জীবনযাত্রার ধারা বা মডেল গড়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে।
সংঘ-সমিতিকে আমরা অনর্থক ও অনৈতিক কর্ম থেকে মুক্ত করে
যখন স্বার্থক ও ন্যায়সঙ্গত কর্মে সাজিয়ে নেব তখনই এমন সংঘ-সমিতি ব্যক্তির আদর্শ ব্যক্তিত্ব গঠনে কার্যকরি ভূমিকা রাখবে।
৬/ সংস্কৃতিঃ
একটি শিশুর ব্যক্তিত্ব তার সংস্কৃতির ছাঁচে গড়ে উঠে।
সামাজিক প্রথা, রীতিনীতি, বিশ্বস, মূল্যবোধ, খাদ্যাভ্যাস প্রভৃতি সাংস্কৃতিক উপাদানে সমাজভেদে ভিন্নতা দেখা যায়।
তাই এক এক ধরনের সংস্কতিতে এক এক ধরনের ব্যক্তিত্ব বিকশিত হয়।
সেজন্য উপজাতিদের ব্যক্তিত্বের সাথে সভ্য সমাজের ব্যক্তিত্বের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ করা যায়।
আমরা যখন ব্যক্তিকে সুন্দর ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সংস্কৃতি উপহার দিতে পারব
তখন তার ব্যক্তিত্বও গড়ে উঠবে স্বার্থক ভাবে।
উল্লিখিত উপাদানগুলো ছাড়াও ব্যক্তিত্বের আরোও উপাদান আছে,
যেগুলোকে সংক্ষেপে এ ভাবে প্রকাশ করা যায় যে,
” সমাজের যেসব বিষয় ব্যক্তিকে প্রভাবিত করে এবং তা থেকে দূষ-গুণ, যোগ্যতা অর্জন হয়,
যেমন- আত্মীয়-স্বজন, কোনো বিশেষ গুণসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব, হাট-বাজার, পত্র-পত্রিকা,
সিনেমা-থিয়েটার ইত্যাদি ব্যক্তিত্ব গঠনের উপাদান।
অতএব,
আদর্শ ব্যক্তিত্ব গঠনের বেলায় প্রথমে ব্যক্তিকে ওইসব উপাদান থেকে দূরে রাখতে হবে
যেসব উপাদান ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের উপর সরাসরি মন্দ প্রভাব ফেলে।
আর যেসব উপাদান মন্দের জন্য গঠন করা হয়নি প্রাসঙ্গিক কারণবশত মন্দপ্রভাব ফেলে,
এক্ষেত্র অভিবাবকদের সচেতন দৃষ্টি অত্যাবশ্যক।
সন্তানকে হিরক আর রত্ন করে গড়তে হলে পরিবারের চেষ্টা ও সচেতনতার বিকল্প নেই।
হাইব্রিড বা উন্নতজাতের বীজ সংরক্ষণে কৃষক বা কৃষি বিভাগ কতই না চেষ্টা আর সতর্কতা গ্রহণ করে,
তার পর এমন বীজ জাতিকে উপহার দেয় যার বিশেষত্বই আলাদা।
ফলে তাকে যত্নসহকারে নাম দেয়া হয় উন্নত ফলনশীল বা উফশী জাতের বীজ।
আমাদের সন্তান আর শিশুরা তো আমাদেরই চাষ,
তাই তাদের থেকে উন্নত কিছু আশা করতে হলে আমাদেরকে কি চেষ্টা নিতে হবে না?
প্রতিটি পরিবার যদি আদর্শ সন্তান গড়ার চেষ্টা করে আর সে পথে ক্লেদ-কাদা ভেদ করতে থাকে আশা করা যায়
জাতি এতে আদর্শ ব্যক্তি উপহর পাবে। যাদের মধ্যে কেউ থাকবে তারকা,
কেউ চন্দ্র আর কেউ হবে সূর্য।এদের প্রতিটাই আলোকময়।
লেখকঃ কবি, গবেষক, দার্শনিক হাতিম আল-ফেরদৌসী।