Breaking News
Home / ইসলাম ধর্ম / সন্তান জীবনটার্নিংয়েঃ আপনার অবহেলা; বিপত্তিতে ভবিষ্যৎ

সন্তান জীবনটার্নিংয়েঃ আপনার অবহেলা; বিপত্তিতে ভবিষ্যৎ

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)

সন্তান জীবন-টার্নিংয়েঃ আপনার অবহেলা;বিপত্তিতে ভবিষ্যৎ

بسم الله الرحمن الرحيم

 

একজন পথিক চলার পথে তাকে পেরোতে হয় অনেক চড়াই-উৎরাই, বাঁক-মোড় আর বন্ধুরতা।

এসব বিপদ যখন সে সার্থক ভাবে অতিক্রম করবে তখনই উদ্দেশ্য স্থলে পৌঁছতে পারবে নিরাপদে,

অন্যথায় গন্তব্যে পৌঁছবে তো দূরের কথা এর আগেই আক্রান্ত হবে বিপদের করালগ্রাসে।

প্রতিটি জীবনের একটি শুরু আছে, আছে একটি শেষও। শুরু থেকে শেষে পৌঁছতে হায়াতের যে প্রবাহ একে জীবন চলার পথ হিসেবে চিহ্নিত করুন।

মানব শিশু এ পথ ধরেই জীবনের বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে বার্ধক্যের দিকে এগিয়ে চলে।

জীবন চলার এ পথেও রয়েছে অসংখ্য বাঁক, মোড় আর বাঁধা-বিপত্তি ।

সাধারণ পথিকের মতো শিশুর জীবন চলাকে দেখলে চলবে না।

শিশুর জীবন চলার প্রথম দিকে অনেক উপাদান অর্জনের মাধ্যমে তার ভবিষ্যৎ পথ চলাকে শক্তিশালী ও সাফল্যমন্ডিত করে তুলতে হয়।

এদিকে লক্ষ রেখে সন্তানের জীবনকে আমরা দু'ভাগে ভাগ করতে পারি।

১/অর্জনকাল।

২/ উপভোগকাল।

সাত থেকে পচিশ বৎসর সময়কালকে অর্জনকাল ধরা যাক।

এ ছাড়া বয়সের বাকিটাকে ধরা যাক উপভোগকাল হিসেবে। অর্জনকাল যার সঠিকভাবে কাজে লাগবে তার উপভোগকাল হবে সুন্দর ও সুখময়।

বিপরীতে অর্জনকাল ভ্রষ্ট ও ভ্রান্ত হলে উপভোগকালে তার জন্য অপেক্ষা করছে করুণ পরিণতি ।

অর্জনকালীন কিছু উপাদান আছে দৈহিক যা নিজের চেষ্টা ছাড়াই অর্জন হয়ে যায়।

যেমন: দৈহিক বৃদ্ধি, ক্ষমতালাভ, বিভিন্ন স্থানে চুল গজানো ইত্যাদি।

আর কিছু আছে গুণগত, যা মেহনতের মাধ্যমে লাভ করতে হয়। যেমন: বিভিন্ন কর্মদক্ষতালাভ, জ্ঞানার্জন, চরিত্র সংশোধন ইত্যাদি।

মানবশিশুর অর্জনকালীন সময়টাকে জ্ঞানী-গুণীরা গুরুত্বের চোখে দেখেন।

এই সময়ের একটি নির্দিষ্ট অংশকে জীবনের টার্নিংপয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেন।

কেননা, এই সময়টাই একটি শিশুর জীবন চলার পথে এমন কঠিন ও জঠিল বাঁক বা মোড় যা একজন পর্বতারোহী তার পথচলায় পেয়ে থাকে।

পর্বতারোহী তার সেই মোড় থেকে ধ্বসে পড়লে পরিণতি যে পর্যায়ে গড়ায় একটি সন্তান যদি তার জীবন চলার বাঁক থেকে ধ্বসে পড়ে তাহলে পরিণতি এরচে বেশি ভয়াবহ হয়।

কেননা, পর্বতারোহীর যদি পড়ে গিয়ে জীবন নাশও হয়, তবুও তার মান-সম্মান, -চরিত্র ইত্যাদি কলঙ্কের সম্মুখীন হচ্ছে না।

কিন্তু সন্তান জীবন চলার টার্নিংপয়েন্ট থেকে ধসে পড়লে তার জীবনের চারিত্রিক দিক কলঙ্কিত হয়ে পড়ে, যা একজন মানুষের বেলায় মানানসই নয়।

নিশ্চয় সন্তানের জন্য এ সময়টি ঝুঁকিপূর্ণ।সন্তানের জীবন চলার পথের এই ঝুঁকিময় অবস্থা ও তাৎপর্যের প্রতি লক্ষ রেখে মনোবিজ্ঞানীরা একে

Period of storm and stress বা ঝড়ঝঞ্ঝা ও পীড়নের সময় বলে নামকরণ করেন।

আসুন জেনে নিই কোন সে ঝুঁকিপূর্ণ সময় যার গুরুত্বের প্রতি লক্ষ রেখে একে সন্তান জীবন চলার টার্নিংপয়েন্ট বা ঝড়ঝঞ্ঝা ও পীড়নের সময় বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এটা ওই সময়, যা Duration অর্থাৎ, বয়ঃসন্ধিকাল , যখন একটি মানব সন্তান সর্ব প্রথম সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতা অর্জনের দিকে যাত্রা শুরু করে।

এখানে এসে শৈশবের শেষ এবং যৌবনের শুরু। বয়ঃসন্ধিকালকে আমরা সাধারণতঃ Pubrty or pre-adolescence তথা,কৈশোরকাল বলে থাকি।

মনোবিজ্ঞানীরা মেয়েদের বেলা ১০ থেকে ১৪ এবং ছেলেদের বেলা ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সকে বয়ঃসন্ধিকাল বলে চিহ্নিত করেছেন। এর পরবর্তী সময়টাকে তারুণ্যকাল বলা হয়।

মেয়েদের ক্ষেত্রে এর সূচনা ১৪ থেকে আর ছেলেদের বেলা ১৫ থেকে শুরু হয়।

এ বয়সের সমাপ্তি মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৭ বছরে আর ছেলেদের বেলা ১৮ বছরে। এর পর থেকে পূর্ণ যৌবনকাল শুরু।

মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে কৈশোরে এবং তারুণ্যে একটু আগে পদার্পণ করে।

এ দশ বৎসর থেকে আঠারো বৎসর পর্যন্ত সময়কালকে মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠাংশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

কারণ, এ সময়টা ভবিষ্যৎ জীবনের ভিত। এ সময় মানুষ নিজেকে প্রশংসনীয় সার্বিক বৈশিষ্ট্যৈ পরিপূর্ণ করে ভবিষ্যতের জন্য গড়ে নিতে হয়।

আমি বলি, জীবনের এ শ্রেষ্ঠ সময়টার ব্যপ্তি ৭ থেকে ২৫ বৎসর পর্যন্ত।

আর এর মধ্যেও সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ যেটি তা হলো বয়ঃসন্ধিকালীন সময়।

অর্থাৎ, ১০ থেকে ১৫ বৎসর সময়। সুতরাং স্পষ্ট হলো যে, ঝড়-ঝঞ্ঝা ও বিপত্তির সময় হচ্ছে, বয়ঃসন্ধিকাল।

আর এটাই জীবনের টার্নিংপয়েন্ট। বয়ঃসন্ধিকাল কেনো এত গুরুত্বপূর্ণ ?

আমরা জেনেছি, বয়ঃসন্ধিকাল সন্তানের অর্জনকালীন সময়ের আওতাধীন, এ সময় একটি মানব সন্তানের যে বিষয়গুলো অর্জন হয় তা দু'

১/ ঐচ্ছিক, যাকে আমরা পূর্বে গুণগত উপাদান বলে নাম দিয়ে এসেছি। এগুলো হলো, কর্মদক্ষতার্জন, শিক্ষালাভ, সাস্থ্যের সংরক্ষণ, ভদ্রতা ও শিষ্টাচারার্জন ইত্যাদি।
 ২/ অনৈচ্ছিক, যাকে পূর্বে আমার দৈহিক উপাদান বলে নামকরণ করেছি। আর তা হলো, সন্তানের মন ও দেহের পরিবর্তন।

এ দু'টি প্রকারের দ্বিতীয় প্রকারটি প্রথম প্রকারের উপর কঠিন থেকে কঠিন নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে চায়।

এই নেতিবাচক প্রভাব থাকে সন্তানকে রক্ষা করা না হয়, তবে সন্তানের উপভোগকাল পঙ্গু ও ভণ্ডুল হয়ে পড়ে।

মনুুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলার মতো বিভিন্ন প্রকারের মারাত্মক দূষে দুষ্ট হয়ে যায়।

সন্তানের দৈহিক পরিবর্তনই তার মানসিক পরিবর্তনের জন্য অনেকাংশে দায়ী।

বয়ঃসন্ধিকালে শরীরে যেসব পরিবর্তন ঘটে সেগুলোকে চার ভাগে ভাগ করা যায়ঃ (ক)

(খ) অঙ্গপ্রত্যঙ্গের আনুপাতিক পরিবর্তন। (গ) মুখ্য যৌন পরিবর্তন। (ঘ) গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্য।

দৈহিক আকৃতির পরিবর্তনঃ

১/ উচ্চতাঃ ছেলেদের উচ্চতার দ্রুত বৃদ্ধি শুরু হয় প্রায় ১৩ বছর বয়সে এবং এটি চলতে থাকে ১৫ বছর পর্যন্ত ।

এরপর উচ্চতা বৃদ্ধির হার হ্রাস পায় এবং ২৩/২৪ বছর বয়সের পর আর বৃদ্ধি পায় না।

মেয়েদের মাসিক ঋতুস্রাব আরম্ভ হওয়ার আগে উচ্চতা বছরে গড়ে ৩ ইঞ্চি বৃদ্ধি পায়।

কিন্তু বয়োপ্রাপ্তির সন্ধিক্ষণে এই উচ্চতা বছরে গড়ে ২-৫ ইঞ্চি বাড়ে। সুতরাং ২ বছরে মোট উচ্চতা বৃদ্ধির পরিমাণ ৫ ইঞ্চি বা ৫.৫ ইঞ্চি হতে পারে।

মাসিক শুরু হওয়ার পর উচ্চতা বৃদ্ধির হার ১ ইঞ্চি হ্রাস পায়। এবং ১৮ বছরের পর উচ্চতা বৃদ্ধি থেমে যায়।

বর্ধন কালের ব্যপ্তি মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের বেশি হওয়ায় ছেলেরা বেশি লম্বা হয়।

২/ ওজনঃ দেহের ওজন মেয়েদের বেলায় সবচেয়ে বেশি বাড়ে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার অব্যবহতি পূর্ব থেকে।

এটা ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত চলতে থাকে। এরপর ওজন বৃদ্ধির হার কমে যায়।

মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের বৃদ্ধি ১-২ বছর পর থেকে শুরু হয়। ১৬ বছর বয়সে সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে ।

তারপর ওজন বৃদ্ধির হার ধীরে ধীরে হ্রাস পায়। ১০ থেকে ১২ বৎসর বয়সের মধ্যে দেহের দ্রুত আকস্মিক বৃদ্ধি শুরু হওয়ার সময়

মেয়েদের কোমর, তলপেট, পায়ের উপরিভাগ, গাল, গলা, ঘাড় ও চোয়ালে চর্বি জমে ।

তার পরবর্তী বয়সে যৌন পরিবর্তন ও উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে জমাকৃত চর্বির অবচয় ঘটে ।

 

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আনুপাতিক পরিবর্তনঃ

শৈশবে দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যে পরিমাণে বৃদ্ধি পায়, বয়ঃসন্ধিকালে তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।

নাক, পা এবং হাতের বৃদ্ধি বয়ঃসন্ধিকালে পূর্ণতা পায়। বয়ঃসন্ধির পূর্বে দেহের তুলনায় পায়ের আকৃতি লম্বা থাকে।

পরবর্তীতে দেহকান্ড দীর্ঘ হতে শুরু করে এবং সে তুলনায় পা কম লম্বা হয়।

বয়ঃসন্ধিতে ছেলেদের কাঁধ প্রশস্ত হয় ও পেশি বৃদ্ধি পায়। পক্ষান্তরে, মেয়েদের নিতম্ব ও স্তন বড় হয়।

মুখ্য যৌন বৈশিষ্ট্যঃ

ইংরেজিতে একে Primary sex characteristics বলে। বয়ঃসন্ধির প্রথম দিকে একজন ব্যক্তির যৌন গ্রন্থি বা অণ্ডকোষের আকৃতি বয়স্ক ব্যক্তির অণ্ডকোষের মাত্র ১০% থাকে।

এরপর অণ্ডকোষ আরো বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ২০-২১ বছর বয়সে পূর্ণতা লাভ করে। অণ্ডকোষ বৃদ্ধির সাথে সাথে ছেলেদের বিশেষাঙ্গের দৈর্ঘ্য বাড়তে থাকে এবং প্রশস্ত হতে থাকে।

যৌনাঙ্গের পরিপক্বতা অর্জনের কিছু দিনের মধ্যেই লিঙ্গ থেকে ঘুমের মধ্যে বির্য নির্গত হয়।

মেয়েদের মুখ্য যৌন বৈশিষ্ট্য হলো, যৌনাঙ্গের বিশেষ আকৃতি এবং এর ভিতরে অবস্থিত যোনি পথ, জরায়ু আর ফোলোপিয়ান নালী ও ডিম্বাশয়।

১১-১২ বছর বয়সে মেয়েদের জরায়ুর আকৃতির গড় ওজন ৫.৩ গ্রাম থাকে ।

এ বয়সে যোনি পথ, ডিম্বাশয়, ফোলোপিয়ান নালী ইত্যাদির আকৃতি বড় হতে থাকে।

মেয়েদের মাসিক ঋতুস্রাব শুরু হলেই বুঝা যায় যে তাদের জননেন্দ্রিয়সহ সম্পূর্ণ জননতন্ত্র পরিপক্কতা লাভ করেছে।

গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্যঃ

ইংরেজিতে একে Secondary Sex Characteristics বলে।

বয়ঃসন্ধিকালে মুখ্য যৌন বৈশিষ্ট্যের মতো গৌন যৌন বৈশিষ্ট্যেও পরিবর্তন ঘটে।

এসব বৈশিষ্ট্য মুখ্য যৌন বৈশিষ্ট্যৈর দ্বারা সৃষ্ট বা অনুগামী বিধায় এগুলোকে গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্য বলা হয়ে থাকে ।

বয়ঃসন্ধিতে গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্যে যেসব পরিবর্তন ঘটে সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।

ছেলেদের গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্যঃ

(ক) পেশিঃ ছেলেদের ঘাড়ের পেশি শক্ত হয় এবং কাঁধ প্রশস্ত হয়।

শরীরের বিশেষ বিশেষ পেশি শক্ত কাজের জন্য উপযোগী হয় ও বড় হয়।

যেমনঃ বাহু , এবং কাঁধ সুঠাম হয়।

(খ) ত্বকের রং গাঢ় হয় এবং লোমশ হয়।

(গ) তৈল গ্রন্থিঃ ত্বকে সিবাম ( Sebum) বা তৈল জাতীয় পদার্থ উৎপাদনকারী গ্রন্থির ক্ষরণ এ সময় বাড়ে।

এসময় মুখে, বুকে ও পিঠে ব্রণ দেখা দেয় । ব্রণ হলো তৈল উৎপাদনকারী সিবাসিয়াস থলি ( Sebaceuos follicles)-এর এক ধরণের অসুখ।

পুরুষদের জন্য যৌন গ্রন্থির এন্ড্রোজেন (পুং হরমোন) এবং মেয়েদের জন্য ইস্ট্রোজেন (স্ত্রী হরমোন)-এর ভারসাম্যহীনতার জন্য এধরণের ব্রণ হয়ে থাকে।

এ বয়সে এন্ড্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যাওয়ায় তৈল গ্রন্থির কার্যকারিতা বেড়ে যাওয়ার ফলে ব্রণ তৈরী হয়।

তাছাড়া, বিশেষ খাদ্যের প্রতি এলার্জি, হরমোনের গোলযোগ, স্টেরয়েডের মাধ্যমে চিকিৎসা এবং আবেগীয় গোলযোগ, ভিটামিনের অভাবকেও ব্রণের জন্য দায়ী করা হয়।

(ঘ) লোমঃ বয়ঃসন্ধিকালে অন্ডকোষ ও লিঙ্গের আকৃতি বড় হওয়ার সাথে সাথে যৌনাঙ্গের চার পাশে ও বগলের নিচে লোম গজায় এবং দাড়ি-গোফ গজায়।

প্রথম দিকে লোম হালকা থাকে পরে ঘন হয়।

(ঙ) কণ্ঠস্বরঃ বয়ঃসন্ধির শুরুতে গলার স্বর ভাঙ্গা ও কর্কশ হয়। পরে স্বরের গভীরতা বৃদ্ধি পায় এবং মসৃণ হয়।

(চ) মানসিক পরিবর্তনঃ একটু বেশি আগ্রাসী মনোভাবাপন্ন হয় এবং মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট হয়।

মেয়েদের গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তনঃ

(ক) নিতম্বঃ বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের নিতম্ব প্রশস্ত ও গোলাকৃতি এবং ভারী হয় ।

সন্তান ধারণের জন্য Pelvis ( শ্রোণীচক্র)- এর অস্থি বৃদ্ধি হয় এবং নিতম্বে চর্বি জমা হয়।

(খ) স্তনঃ নিতম্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্তনের আকৃতি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।

স্তনের গ্রন্থির কার্যকারিতা বৃদ্ধির ফলে স্তন বড় ও গোলাকৃতি হয় এবং স্তনের বোটা বড় হয়।

(গ) যোনি অঞ্চলের লোমঃ এ সময়ে যোনি অঞ্চলে ও বগলের নীচে লোম গজায়। বয়ঃসন্ধির শেষ পর্যায়ে হাত-পায়ের লোম মোটা হয়।

(ঘ) এসময় ত্বকের ও বগলের নীচের ঘর্মগ্রন্থি থেকে বেশি পরিমাণে ঘর্ম নিঃসরণ হয় ।

ঋতুস্রাব শুরুর পূর্বে এবং ঋতুস্রাব চলার সময় ঘাম ঘন হয় এবং বিশেষ ধরণের গন্ধযুক্ত হয়।

(ঙ) পেশিঃ বয়ঃসন্ধিকালে কাঁধ, হাত ও পায়ের পেশির আকৃতি বড় হয় এবং এসব পেশির শক্তি বৃদ্ধি হয়; ফলে এসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গঠন সুঠাম ও মজবুত হয়।

(চ) কণ্ঠস্বরঃ এসময় তাদের কণ্ঠস্বর সুরেলা ও শ্রুতিমধুর হয়। ছেলেদের মতো ভাঙ্গা ভাঙ্গা বা কর্কশ হয় না।

(ছ) ত্বকঃ এসময় ত্বকের নিচে প্রচুর চর্বি জমা হয় বলে ত্বক মসৃণ হয়, তবে সেই খাদ্য ও ভিটামিনের অভাবে অনেকের ত্বক কর্কশ হয় ।

ত্বকের তৈল গ্রন্থির ক্ষরণ এসময়ে বেড়ে যায় এবং মুখে ও পিঠে ব্রণ দেখা দেয়।

(জ) ইস্ট্রোজেন হরমোনের কার্যকারিতার জন্য কৈশোরে মেয়েদের স্তনের বোটার চারপাশের বৃত্তের বর্ণ পরিবর্তন হয়ে ক্রমশ একটু তামাটে হতে থাকে।

ওই সকল দৈহিক পরিবর্তনের সাথে সাথে সন্তানের মানসিকতায় এমন কতগুলো বিষয় আরূপিত হয় যা তাকে পিড়া দেয়।

যেমনঃ * শৈশব থেকে কৈশোরে পদার্পণ। কেননা , এতে সে জীবনের একটি ধাপ হারিয়ে অপর একটি ধাপে পদার্পণ করায় তার মনে এক অব্যক্ত বিরহের বেদনা অনুভব হয়।

জীবনের পর্যায়গুলো অতিক্রমের বেদনা বড়দের মধ্যে থাকলেও শিশুরা বেশি আবেগী হয় বিধায় তারা এটি সহজে মেনে নিতে পারে না।

হাতেগোনা কয়েক বৎসরের এ অল্প সময়ে তার দৈহিক পরিবর্তন ঘটে,

*এতে অনেক সময় সন্তানের দেহ ও মনের ভারসাম্যতা সমান থাকে না,

কিন্তু সমাজের মানুষ তার সাথে বড়দের আচরণ দেখাতে চায়। এটি সন্তানের উপর পিড়ন সৃষ্টি করে।

* অনেক সময় সন্তানেরা নিজেদের দৈহিক পরিবর্তনের উপর গর্বিত হয়ে অহংবোধে মেতে উঠে

এবং বড়দের সাথে তাল মিলিয়ে সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ে কিছু করতে চায়,

কিন্তু বড়রা তা সহজে মেনে নিতে পারে না। তাই তারা অনেক সময় বড়দের বক্রোক্তির সম্মুখীন হয়ে মনে আঘাত অনুভব করে।

এভাবে তারা শুরু করে ভবিষ্যতের ব্যাপারে নিরাশ হতে ।

 * দৈহিক বৃদ্ধিকালে সন্তানের মনে বিরাট কৌতূহল, আকাঙ্ক্ষা ও উচ্চাবিলাসের সৃষ্টি হয় তখন তা মেটানোর মানসিকতা তাকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলে।

দৈহিক পরিবর্তনের মতো যৌন পরিবর্তনের সময়ও সন্তানের মনে এমন কতগুলো যাতন-পিড়ন নিয়ে আসে যা পূর্বের চেয়েও মারাত্মক।

যেমনঃ

* সন্তানের নতুন যৌনোদ্ভব তাকে ভাবিয়ে তুলে। তার মধ্যে সৃষ্টি করে এক অবর্ণনীয় কৌতূহল।

এ কৌতূহলের সমাধান একটু বিস্তৃত জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে করো থেকে জানতে চায়।

এসময় পরিবারের অসচেতনতার দরুন সে বখাটেদের সংস্পর্শে এসে মন্দ পথে পা বাড়ায়।

* প্রতিটি নতুন বিষয়কেই মানুষ প্রথম প্রথম সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে জানে না।

সন্তানের যৌন ক্ষমতালাভ এর ব্যতিক্রম নয় বিদায় সে তখন যৌনজীবনের প্রয়োগ নিয়ে উৎকণ্ঠায় থাকে।

* এই সময়ে তার মধ্যে সময়ে সময়ে জাগ্রত হওয়া যৌন ক্ষুধা তাকে ব্যতিব্যস্ত করে

তখন তা নিবারণ করতে গিয়ে সে অনেক সময় তার বর্তমান অবস্থানস্থল এবং বর্তমান কর্মক্ষেত্র ছেড়ে দিয়ে

এমন স্থান ও কর্ম খুঁজে বেড়ায় যেখানে গিয়ে এর সমাধান পাবে ।

এ কারণেই এ বয়সে সন্তানেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা কর্মসংস্থান পরিবর্তন করতে চায়।

* যৌন ক্ষুধা প্রতিটি মানুষের জন্যই একটি পীড়ন।এটি মানুষকে সবসময় তাড়া করে বেড়ায়।

বড়দের বেলা এটি তাদের বিবেক ও বুদ্ধিগত নিয়ন্ত্রণে থাকে, কিন্তু কিশোরদের মধ্যে এই নিয়ন্ত্রণ না থাকায় অপরাধে জড়িত হয় ।

এরপর তার জীবনে নেমে আসে অপরাধবোধের কালো মেঘ,যা তার জীবনকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়।

এভাবে সে কর্ম বিমুখ ও উদাসীন হয়ে পড়ে

 * এই বয়সে কিশোর-কশোরীরা বেশি বেশি বন্ধুত্ব গ্রহণ করতে চায় ।

সে বন্ধুদের মনোরঞ্জন হেতু নিজের ভাব-ভঙ্গী আকর্ষণীয় করে তুলতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

এছাড়াও দৈহিক ও যৌন পরিবর্তনের মাধ্যমে এমন কতগুলো কৌতূহল জাগে যা সে যে কারো কাছে মুখ খুলে বলতে গেলে লজ্জা এসে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় ।

এ ভাবে কিছু মনোচাহিদা তার মধ্যে জন্ম নেয় যা সে পূর্ণ করতে গেলে সমাজ তাকে মেনে নেবে না।

তখন সে উদ্ভ্রান্তের মতো হয়ে গিয়ে মাঝেমধ্যে এমন এমন কর্মে জড়িয়ে পড়ে যা মানুষের চোখে দূষণীয় ।

তখন সে অপরাধবোধে ভোগতে থাকে, ফলে তার ভেতরাত্তাই তাকে তাড়ন করে।

তখন তার মধ্যে অসহায়বোধ জেগে ওঠে । এসময় পরিবার-পরিজন যদি তাকে সদুপদেশ ও পরামর্শ দিয়ে কাছে টেনে না নেন,

তাহলে তার মধ্যে এমন কতগুলো প্রবণতা জন্ম নেয় যা তার জীবনের জন্য চরম ক্ষতিকারক ।

সে প্রবণতাগুলোর কয়েকটি হচ্ছে__

(১) একাকিত্বের বাসনাঃ অন্যের পরামর্শ ও সঠিক মূল্যায়ন না পাওয়ায় তার মনে এক তিক্ততা বিরাজ করে।

তখন মনোভাবের বিরূপ প্রতিক্রিয়া হেতু ছেলে-মেয়েরা বা স্বমেহনের মাধ্যমে আনন্দ পায়।

কিন্তু এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে বা এটা সমাজে গ্রহণযোগ্য নয় বলে তার মনে অপরাধবোধ জাগে।

(খ) একঘেয়েমিভাবঃ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের কাজ-কর্ম, পুরনো বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা ইত্যাদিতে আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে।

সেজন্য তাদের মধ্যে একঘেয়েমি ভাব দেখা দেয় এবং কর্মদক্ষতা হ্রাস পায়।

(গ) অসামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণঃ বয়ঃসন্ধিকালে দেহের পরিবর্তন অতি দ্রুত সংঘটিত হয় বলে ছেলে-মেয়েরা এসব পরিবর্তনের সঙ্গে অতি তাড়াতাড়ি খাপ খাওয়াতে পারে না,

সেজন্য তাদের আচরণ বিশৃঙ্খল ও বিদঘুটে হয় । এ সময় তার প্রতি পরিজনের অবহেলা তার আচরণকে আরো অসামঞ্জস্য করে তুলে।

(ঘ) অসামাজিক প্রবণতাঃ এ বয়সে সঙ্গ দূষে এবং ঔৎসুক্যবশতঃ ছেলে-মেয়েরা কিছু অসামাজিক আচরণ করে থাকে।

যেমনঃ , মাদকাসক্তি ইত্যাদি এ বয়সে প্রথম শুরু হয়।

তাছাড়া, এ বয়সে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে অসহযোগিতা ও ঈর্ষাপ্রসূত আচরণ লক্ষ করা যায় ।

তখন পরিবারের বড়দের সুনজর তার থেকে সরে গেলে মারাত্মক ভাবে অসামাজিক হয়ে ওঠে।

(ঙ) আবেগের আতিশয্যঃ বয়ঃসন্ধিতে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে অতিরিক্ত আবেগ প্রবণতা লক্ষ করা যায়। বিশেষতঃ নৈশবীর্য

স্খখলন ছেলেদের মধ্যে এবং ঋতুস্রাব মেয়েদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার জন্ম দেয়। তখন অভিবাবকদের অবহেলা তাদের দিশেহারা করে রাখে।

(চ) নেতিবাচক আত্ম ধারণাঃ এ বয়সে যুবক-যুবতীদের মধ্যে যে শারীরিক পরিবর্তন ও নতুন আবেগ প্রবণতা সৃষ্টি হয়,

তা যদি বয়স্ক ব্যক্তিরা ভালো চোখে না দেখে তাহলে তাদের মধ্যে নেতিবাচক আত্মধারণা সৃষ্টি হয় এবং আত্মবিশ্বাস কমে যায়।

(ছ) লজ্জা ও আশঙ্কাঃ এ বয়সে ছেলে-মেয়েরা তাদের শারীরিক পরিবর্তন ও যৌন জীবন নিয়ে চিন্তিত হয় ।

যৌন ক্রিয়ার যে তাড়না তারা অনুভব করে তা কি স্বভাবিক না অস্বাভাবিক! এসব প্রশ্ন নিয়ে তারা বিব্রতবোধ করে।

তাদের র কারণগুলো নিম্নরূপঃ

(১) তারা হঠাৎ বড় হয়ে যাচ্ছে কেনো?

(২) তাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলো কি অন্যরা পছন্দ করছে?

(৩) যাদের পরিবর্তন আগে আসে তারা ভাবে, অন্যদের তুলনায় আমর হঠাৎ করে লম্বা হয়ে যাচ্ছি কেনো ?

যাদের পরিবর্তন দেরিতে আসে তারা যৌনভাবে সক্ষম হবে কি না, তা নিয়ে ভাবে।

(৪) তাদের চেহারা ও শারীরিক গঠন কি বন্ধু-বান্ধব বিশেষ করে বিপরীত লিঙ্গের সমবয়সীরা পছন্দ করবে ? ইত্যাদি।

তাদের পেরেশানীর এ মূহুর্তে যদি পরিবার তাদের থেকে বিমুখ থাকে তাহলে তারা ভবিষ্যতের ব্যাপারে আশঙ্কা বোধ করে।

কৈশোর ও তারুণ্যে সন্তানের মনোদৈহিক পরিবর্তন সংক্রান্ত এতক্ষণের দ্বারা আমরা বুঝতে পারলাম,

এ বয়সে সন্তানরা মানসিকভাবে খুবই অশান্তি ও অস্থিরতায় থাকে ।

অথচ, এই বয়সই তার জন্য গুণগত উপাদান অর্জনের মূল সময়। আর গুণগত উপাদান মানসিক অশান্তি বা অস্থিরতা নিয়ে অর্জন করা সম্ভব নয় ।

কিন্তু তার পরও তাকে এই সময়ের মধ্যেই এ গুণগুলো অর্জন করতে হবে ।

না করলে তার উপভোগ কাল হবে অশান্তিময় ও মূল্যহীন।

তাইতো এ সময়টা সন্তানের জীবনের উপর দিয়ে চলে যাওয়া এক Period of storm and stress বা ঝড়ঝঞ্ঝা ও পীড়ন।

আবার এটি জীবনের টার্নিংপয়েন্টও । যদি কোন সন্তান এ ঝড়ঝঞ্ঝাময় টার্নিংপয়েন্ট যথাযথভাবে পাড়ি দিতে পারে তাহলে সে-ই হবে ভবিষ্যতের রত্ন ।

এজন্যই তো এসময়টার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি।

এসময় অভিভাবকদেরকে সন্তান অসচেতন থাকলে চলবে না, বরং প্রয়োজনানুযায়ী তাকে উপযোগী তথ্য প্রদান করতে হবে ।

তাকে দৈহিক পরিবর্তনের স্বাভাবিকতার ধারণা দিতে হবে এবং তখনকার করণীয় সম্পর্কে অবগত করতে হবে ।

ঠিক এভাবে যৌন বিকাশ সম্পর্কেও ধারণা দিতে হবে । এতে যৌন ক্ষমতাও যে জীবনের স্বাভাবিক অংশ তা তার জানা হওয়ার মাধ্যমে সে অনর্থক দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাবে ।

কিন্তু এটি যেহেতু একটি ব্যতিক্রমী পর্যায় তাই পরিবারের কেউ সরাসরি বলতে না গিয়ে ভিন্ন ধারা গ্রহণ করতে হবে ।

আর সেই দ্বারা হলো, কওমী মাদরাসা গুলিতে প্রাথমিক অযূ-গোসল শিক্ষা প্রসঙ্গে যেটুকু আলোচনায় আসে

এ অল্প বয়সে এটাই যৌন ধারণা দানের সবচেয়ে সুন্দর ও ভদ্র পদ্ধতি। শিশুদেরকে এসম্পর্কে শিক্ষা দানের ভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করলে ক্ষতি ছাড়া লাভ ডেকে আনবে না।

এ সময়টাতে সন্তানের সুস্থ মানসিকতা ও স্থির চিত্ততা সৃষ্টির জন্য অভিভাবকদের খুব খেয়ালী হতে হবে।

প্রয়োজনে সুচিন্তক ও সুপরামর্শক মনোবিজ্ঞানীদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

অভিভাবকরা যদি তখন সন্তান সম্পর্কে বেখবর থাকেন তাহলে সন্তানের জীবনে দৈহিক ও মানসিক বিপত্তি নেমে আসতে পারে ।

সাধারণত এ বয়সে শিশুরা মন্দের দিকে আগ্রহ নিয়ে ছুটে, তাই সবসময় তাদেরকে ভালো সঙ্গী ও পরিবেশ দানের চেষ্টা চালাতে হবে ।

চরিত্র সংশোধনের সবচে উত্তম পন্থা হচ্ছে সন্তানকে নামাজে অভ্যস্ত করে তুলা।

এজন্যই তো সন্তানের মনে মন্দত্বের ধারণা জন্মের আগেই , সাত বৎসর বয়স থেকেই ইসলম তাকে নামাজে পড়তে বলে ।

কারণ, নামাজ মানুষক সকল মন্দ কাজ থেকে বাঁচায় । অতএব সন্তানের প্রতি যত্নশীল হোন, তাকে গড়ে তোলোন সার্থক পুরুষ হিসেবে।

হাতিম আল-ফেরদৌসী

লেখকঃ কবি,কলামিস্ট ও গবেষক 

About আবদুল্লাহ আফজাল

হাফিজ মাওঃ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আফজাল। ২০১২ সনে হিফজ সম্পন্ন করেন। উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন২০১৬ সনে। দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন ২০২০ সনে। ঠিকানা: বালাগঞ্জ, সিলেট। মোবাইল নাম্বার: 9696521460 ইমেইল:hafijafjal601@gmail.com সকল আপডেট পেতে এবং ওয়েবসাইটে লিখা পাঠাতে ফেসবুক পেজ👉MD AFJALツ ফলো করুন।

Check Also

অধিক হারে ইস্তেগফারের ফজিলত

ইস্তেগফারের ফজিলত

হামদ ও সালাতের পর… রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে যত ভালো কাজ শিক্ষা দিয়েছেন, তাতে …

Powered by

Hosted By ShareWebHost