Breaking News
Home / পর্দা/নারী / আজহারী সাহেবের ফতোয়া ও তার ফলাফল

আজহারী সাহেবের ফতোয়া ও তার ফলাফল

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)

আজহারি সাহেবের ফতোয়া ও তার ফলাফল

بسم الله الرحمن الرحيم

প্রিয় পাঠক/পাঠিকা. ফতোয়া প্রধানের ক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরি।কারণ আমার ফতোয়া শুনে যে ব্যক্তি আমল করবে,

الدال علي الخير كفاعله  এই মুলনীতি হিসাবে তার প্রাপ্ত সাওয়াবের ন্যায় আমাকেও সাওয়াব দেওয়া হবে।

যদি আমি ভুল ফতোয়া প্রধান করি তাহলে?

তাহলেও তার প্রাপ্ত গোনাহের একভাগ আমার আমলায় আসবে। এজন্যই ফতোয়া প্রদানের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন জরুরি।

সুপ্রিয় পাঠক/পাঠিকাঃ

আজহারি সাহেব যদিও মুতাকাদ্দিমিন হাজরাতের ফোলো করে ফতোয়া দিয়েছেন,যা উম্মতে মুতাআখখিরিন তথা,

জুমহুর উলামায়ে কেরামের ইজমা মতে নিিষিদ্ধ।

তাই আসুন! এই ফতোয়ার ফলাফল সম্পর্কে  দুটি বাস্তব ঘটনা আপনাদের নিকট আলোচনা করি ।

একজন সদ্য বিবাহিত দম্পতি । লাভ-ম্যারেজ করা দম্পতিগুলোর টা প্রথম প্রথম সোনায় সোহাগা থাকে।

তাদের বেলায়ও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। স্বামীর নতুন চাকরি, তাই খুব সকালেই বাসা থেকে বেরিয়ে যান। ফেরেন সেই রাতে।

 

ছুটির দিনে মাঝে মাঝে তাদেরকে নারায়ণগঞ্জের কিছু জায়গায় ঘুরেবেড়াতে দেখা যায়।

জেনারেল শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও কখনো মেয়েটিকে ছাড়া বাহিরে বের হতে দেখিনি।

এমনকি হাত-মোজা পা-মোজা এবং মুখেও থাকে নেকাবসহ পর্দা।

ছেলেটি যখন অফিসে থাকে তখন মেয়েটি সারাদিনই বসে বসে দেয়াল টিভিতে মিজানুর রহমান আজহারি সাহেবের ওয়াজ শোনে, দেখে।

 

হয়তো ওয়াজ শুনে শুনেই পর্দার প্রতি মেয়েটির এত আকর্ষণ তৈরি হয়েছে।

 

যাইহোক, অনেকদিন যাবত তারা বাস করছে আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে কিন্তু কোনোদিন তাদের মধ্যে কোনো বিবাদ দেখিনি।

গত কয়েকদিন আগে হঠাৎ করেই তাদের মধ্যে শুরু হয় তর্কাতর্কি ।

এমনকি এক পর্যায়ে সেটা মোটামুটি বড় ধরনের একটা তে রূপ নেয়।

স্বামী-স্ত্রীর ব্যাপার বলে কেউ তাদের মাঝে নাক গলাতে আসেনি।

 

সদ্য বিবাহিত একটা দম্পতি, খুব ভালোভাবেই তো চলছিল তাদের সংসার। হঠাৎ কী থেকে কী হয়ে গেল কে জানে!

আজ দেখি ছেলেটি অফিসে চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর মেয়েটিও বাসা থেকে বের হয়ে গেল।

মেয়েটি বাসা থেকে প্রায়ই বের হয়। এটা কোনো সমস্যা না।

ছেলেটি সকাল সকাল অফিসে চলে যাওয়ার কারণে প্রায় সময়ই মেয়েটিকে বাজার করাসহ বিভিন্ন কাজ করতে হয়।

 

কিন্তু অবাক করা বিষয় যেটা, সেটা হচ্ছে মেয়েটি আজ বোরখা পরেছে ঠিকই কিন্তু মুখে নেকাবও পরেনি হাতে পায়ে মোজাও পরেনি!

 

আজই প্রথম আমি মেয়েটিকে দেখলাম সামনে পড়ে যাওয়ায়। আমার স্ত্রী না বললে মেয়েটিকে আমি চিনতেও পারতাম না।

 

মেয়েটি যথেষ্ট সুন্দরী। আল্লাহ তায়ালা বেগানা র উপর অনিচ্ছাকৃত একবার চোখ পড়ে গেলে,

দ্বিতীয়-বার তাকানোর প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি না করলে আমিও মেয়েটিকে ভাল করে তাকিয়ে আরেকবার দেখতাম।

মেয়েটা এতোটাই সুন্দরী!

 

আমি নাহয় অসন্তুষ্টির ভয়ে দ্বিতীয়-বার মেয়েটির দিকে তাকালাম না।

কিন্তু মহল্লার পিন্টু, মিন্টু, অরুণ, বরুণেরা তো মেয়েটির দিকে ঠিকই তাকাবে।

খুব ভাল করে দেখবে। কাছে ঘেঁষার চেষ্টা করবে।

 

যাহোক, সেগুলো পরের বিষয়।

 

হঠাৎ মেয়েটি এতোটা বদলে গেল কেন সেটা আমার কোনোভাবেই বোধগম্য হচ্ছে না।

 

বিষয়টা পরিষ্কার হলো আজকে। জানতে পারলাম সেদিন স্বামী-স্ত্রীর মাঝে তর্কাতর্কি হওয়ার কারণও।

মেয়েটি মিজানুর রহমান আজহারির একজন অন্ধ ভক্ত। ছেলেটিও। তবে ছেলেটি অন্ধভক্ত নয়।

 

স্বামী-স্ত্রী বসে প্রায়ই আজহারির ওয়াজ শোনে।

কদিন আগে যখন আজহারি সাহেব ফতুয়া দিলেন মেয়েরা মুখ এবং হাত ঢেকে রাখা ফরজ নয়।

ইচ্ছে করলে মেয়েরা হাত এবং মুখ খোলাও রাখতে পারবেন এবং প্রয়োজনে হাতমুখ খোলা রেখে বাজারেও যেতে পারবেন,

তখন থেকেই মেয়েটির মনে ব্যতিক্রম চিন্তা জাগে।

হাতমুখ ঢেকে রাখা ফরজ না হওয়ার পরও কেন তাকে হাতমুখ ঢেকে বাহিরে যেতে হবে বলে প্রশ্ন রাখে তার স্বামীর কাছে।

 

স্বামী বেচারা এত ইসলামি জ্ঞান কোথায় পাবেন যে মিজানুর রহমান আজহারির মতো বিখ্যাত ব্যক্তির ফতোয়ার বিরোধিতা করবেন!

 

স্বামী স্ত্রীর প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে পারে না। তবে স্বামী স্ত্রীকে এটা বোঝাতে চেষ্টা করে যে,

স্ত্রী হাতমুখ ঢেকে বাহিরে গেলেই তার কাছে ভাল লাগে। স্বামী চায় না যে কোনো পরপুরুষ তার বউকে দেখুক।

কিন্তু স্ত্রী স্বামীর এই কথা মানতে নারাজ। তার কথা হচ্ছে মিজানুর রহমান আজহারি বর্তমান সময়ের সবচে জনপ্রিয় বক্তা,

নন্দিত মোফাসসির। যার ভক্ত লক্ষ লক্ষ তরুণ সমাজ। কথায় কথায় ইংরেজি বলে। দেখতে সুন্দর। ইত্যাদি….

 

সেই আজহারির কথা না শুনে সে তার স্বামীর কথা শুনবে কেন? যদিও আজহারি বলেছে মুখ ঢেকে রাখা উত্তম।

তাতে কী? না ঢেকে রাখা তো হারাম বলেনি।….

 

তাদের বিষয়ে আরো জানতে পারলাম যে, কদিন আগে যখন আজহারি সাহেব নারায়ণগঞ্জের জালকুঁড়ি'তে মাহফিলে আসলেন,

তখন মেয়েটি তার স্বামিকে না বলেই আজহারির ওয়াজ শুনতে গিয়েছিলেন। প্রিয় বক্তাকে খুব কাছে থেকে একটু দেখার জন্য।

স্বামিকে বলে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নিষেধ করার ভয়ে না বলেই চলে গেছেন। প্রিয় বক্তার আগমন বলে কথা….।

 

এসব বিষয় নিয়ে প্রতিদিনই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চলছে তর্কাতর্কি, মনোমালিন্য।

 

আমার জানামতে এটুকুই হচ্ছে তাদের সংসারের বর্তমান কলহের কারণ।

যে সংসারটা কিছুদিন আগেও ছিল ভালোবাসায় ভরপুর, সেটা আস্তে আস্তে একটা ভাঙনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

 

ছেলেটার মনে এখন অনেকটাই আজহারি-ঘৃণা সৃষ্টি হয়েছে। আর মেয়েটার মনে আজহারির প্রতি মহাব্বত আরো বেড়েছে।

কারণ, আজহারির ফতুয়ার জন্যই আজ সে তার সুন্দর চেহারাটা বাহিরের মানুষকে দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে।

এত সুন্দর চেহারা আল্লাহ দিয়েছেন, সেটাকে ঘরের মধ্যে বন্দি করে রাখতে কার ভাল লাগে…..?

 

ছেলেটা এখনও খুব সকালে অফিসে চলে যায়। আর মেয়েটাও বিভিন্ন প্রয়োজনে হাতমুখ খোলা রেখে বাহিরে যায়।

 

এলাকার মাদকাসক্ত কিছু যুবক মেয়েটির সুন্দর চেহারার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে। বিভিন্ন টিপ্পনী কাটে।

 

মেয়েটি বিরক্ত হয় না। বরং নিজের সুন্দর চেহারার জন্য গর্ব হয়।

 

মহল্লার ছোট্ট গলির মোড়ের দোকানদার ছেলেটির বয়স খুব বেশি নয়। মাত্র ২৬। দেখতে হ্যান্ডসাম।

আগে মেয়েটি নেকাব পরে যেতো বলে ছেলেটি খালাম্মা ভেবে সদাই দিতে দেরি করতো।

এখন মেয়েটির সুন্দর অবয়বের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে সাথেসাথেই সদাই দিয়ে দেয়…….

.

এই ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন তারিকুল ইসলাম তুহিন, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ।

দিতীয় আরেকটি ঘটনা

স্বামী বিবিকে নিয়া কাপর কিনতে গেল। কাপর কিনে বাড়ি ফেরার সময় বিবি স্বামীকে বলল,

দোকানদার ছেলেটা দেখতে যেমন স্মার্ট কথায়ও অমায়ীক। মার্জিত ও ভদ্র ব্যবহারে মুগ্ধ না হয়ে নাই।

 

স্বামী বেচারা চুপ করে শুধু শুনতেছে আর ভিতরে ভিতরে রাগে কড়কড় করতেছে।

অবশেষে রাগকে গোপন করে জিজ্ঞাসা করল,,

তুমি অল্পক্ষন কাপর কিনে তাহার এত প্রশংসা করতেছ ? এত অল্প সময়ে কি মানুষ চেনা যায় ?

 

জবাবে বিবি বলল,, তুমি আমাকে রেখে যখন ব্যাংকে গিয়াছিলে তখন ছেলেটা আমাকে বলল,

আমি নাকি অনেক সুন্দর। কালো বুরকায় নাকি খুব মানাইছে। আরো বলেছে, তুমি নাকি ভাগ্যগুনে আমার মত বউ পেয়েছ।

তুমি নাকি আমাকে বিবাহ করে অনেক জিতেছ।

বিবির কথা শুনে স্বামীর মাথায় রক্ত উঠে গেছে। কিন্তু রাগকে গোপন করেছে এবং নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে যে,

এতদিন আজহারীর ফতুয়ার পক্ষে যেসব তর্ক বিতর্ক করেছি সবই ভুল করেছি।

আজ যদি বিবির মুখ খোলা না থাকত তাহলে এই সমস্যা হত না। এবার মনে মনে কঠিন সপথ নিয়াছে যে,

আর কোনদিন মুখ খোলা অবস্থায় বিবিকে বাহিরে বের হতে দেওয়া হবে না।

মেয়েদের চেহারা হল সৌন্দর্য্যর কেন্দ্র। যার কারনে যত প্রসাধনী আছে তার অধিকাংশই মুখে মাখা হয়।

আপনিও লক্ষ্য করে দেখবেন যে, যেসব মেয়েরা নগ্নভাবে চলাফিরা করে তাদের দিকে মানুষের যে পরিমান আকর্ষন তার চেয়ে

শতগুন আকর্ষন হল সু্ন্দরী নারীদের মুখ খোলে বুরকা পড়ার প্রতি। কিন্ত যেসব বুরকা খাস পর্দার জন্য পড়া হয়,

সেসব বুরকার প্রতি সবাই ের নজরে তাকায়। কারন বুরকার ভিতরে কি বয়স্ক, নাকি যুবতি তাহা জানার উপায় নাই।

আর এসব বুরকাওয়ালীর প্রতি আল্লাহর রহমত থাকে বিধায় তাদেরকে কেউ উত্যোক্ত করে না।

আল্লাহপাক আমাদেরকে সহি বুঝ দান করুন।

উপরোক্ত দুটি ঘটনা থেকে আমরা বাস্তব উপলব্ধি করতে পারলাম যে,মেয়েদের চেহারা না ঢেকে পর্দা হয় না।

সকল মা-বোন এক হই সহিহ আকিদা মেনে হক্কানী আলিমগণের মতামত পর্দা করি।

About আবদুল্লাহ আফজাল

হাফিজ মাওঃ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আফজাল। ২০১২ সনে হিফজ সম্পন্ন করেন। উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন২০১৬ সনে। দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন ২০২০ সনে। ঠিকানা: বালাগঞ্জ, সিলেট। মোবাইল নাম্বার: 9696521460 ইমেইল:hafijafjal601@gmail.com সকল আপডেট পেতে এবং ওয়েবসাইটে লিখা পাঠাতে ফেসবুক পেজ👉MD AFJALツ ফলো করুন।

Check Also

নারী শিক্ষা সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

নারী শিক্ষা সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি যুগে যুগে নারী শিক্ষার স্বরূপ বিশ্লেষণ

(মুসলিমবিডি২৪ডটকম) নিচের লিংকে ক্লিক করে পূর্ববর্তি অংশ পড়ুন,এর পর থেকেঃ  মহান আল্লাহ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি …

Powered by

Hosted By ShareWebHost