(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে তাঁর প্রতিনিধি বা খলীফা হিসেবে সৃষ্টি করেছেন।
আর মানুষকে করেছেন মরণশীল।তাই একজনের আগমনে আরেকজনের প্রস্থান ঘটবে।
পূর্ববর্তীরা পরবর্তীদের জন্য জায়গা খালি করে দেবে এটাই স্বাভাবিক।এক্ষেত্রে সাধারণত একটি প্রশ্ন জাগ্রত হয় যে,
যারা প্রস্থানকরবেন, মৃত্যু বরণ করবেন,তাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তি কী হবে?
বস্তুত আল্লাহ তাআলামানবজাতিকে দুভাগে ভাগ করেছেন।এক.নবী-রাসুল. দুই.সাধারণ উম্মত।
নবী-রাসুলগনের যৎসামান্য রেখে যাওয়া সম্পদে মিরাছ বা উত্তরাধিকার বিধান কার্যকার হয়না।
ان الانبياء لم يورثو دينار ولا درهما অর্থাৎ নবী-রাসুলগন দিনার দিরহামের উত্তরাধিকার রেখে যান না।
আর দ্বিতীয় শ্রেণীর লোকদের রেখে যাওয়াসম্পত্তিতে উত্তরাধিকার বা মিরাছের বিধান কার্যকর হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে,বিভিন্ন ধর্মে মানুষ হাজারও পদ্ধতিতে মিরাছ বন্টন আগেও করত এখনও করে।
এসব বন্টনের প্রায় সবগুলোই জুলুম নির্ভর।যাকে যেভাবে যতটুকু হক্ব দেয়া দরকার তাকে ততটুকু সেভাবে দেয়া হয়না।
অনেককেই করা হয়েছে একেবারে বঞ্চিত।ইসলাম আগমনের পূর্বে আরব জাহিলিয়াতে যেভাবে মিরাছ বন্টন হত তারও ভিত্তি ছিল জুলুমের উপর।
হিন্দু,বৌদ্ধ এবং অন্যান্য ধর্মে যেভাবে মিরাছ বন্টন হয় তারও ভিত্তিজুলুমের উপর।কিন্তু ইসলাম মানবতা ও সত্য-সরল ধর্ম।
তাই তার প্রাপ্য অধিকার ন্যায্যভাবে লাভ করার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে।
ইসলামে উত্তরাধিকার ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য
ইসলামী শরীয়ত নিকটাত্মীয়দের মধ্যে উত্তরাধিকার (মিরাছ) এর সম্পদ বন্টনের জন্য একটি ইনসাফপূর্ন বিধান দান করছে।
কোরআন+সুন্নাহ এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন বক্তব্য প্রদান করেছে।বিষয়টি মানুষের রায় ও মতের উপর ছেরে রাখা হয়নি়।
কেননা মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই হেকমত সম্পর্কে অবগত নয়।যে হেকমতের কারণে এ শরীয়তেরবিধানসমূহ মহামান্বিত হয়।
আমরা অন্যন্য ধর্মের সাথে তুলনা করলে দেখতে পাই যে, ইসলামী মিরাছ ব্যবস্থা একটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ব্যবস্থা, যা অন্যান্য ধর্মে কল্পনা করা যায় না।
আর এ বৈশিষ্ট্য একদিক দিয়ে নয়, বরং বহুদিক দিয়ে।আর এই বৈশিষ্ট্যগুলো ধরা পড়ে নিমুক্ত শিরোনামে।
মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া যাবতীয় সম্পদ মিরাছের অন্তর্ভুক্ত
ইসলামী মিরাছব্যবস্থার প্রথম ও প্রধান কথা হচ্ছে,মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সকল সম্পদ মিরাছের অন্তর্ভুক্ত।
চাই তা ব্যক্তিগত ব্যবহৃত জিনিস হোক যেমনঃ কাপড়,বাসন ইত্যাদি।অথবা এমন সম্পদ যা দ্বারা লাভবান হওয়া যায়।
শরীয়ত এ সিদ্ধান্ত প্রধান করেছে যে,ছোট-বড়,দামি-কমদামী সবরকমের বস্তু মিরাছের অন্তর্ভুক্ত।
এখান থেকে মাত্র তিনটি অংশ বাদ যাবে।এক.কাফন-দাফনের খরচ।দুই.ঋন।তিন.মৃত ব্যক্তির কোন যায়েজ অসিয়ত থাকলে তা পুরন করা।
পক্ষান্তরে ইসলাম আগমনের পূর্বে বহু জাতি এমন ছিল,যারা এই দুরকমের সম্পদের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করতঃ
ফলে তারা মৃতে্য ওয়ারিশকে কেবল দিতীয় প্রকারের সম্পদ দিত,আর প্রথম প্রকারে মিরাছ চলে বলে মনে করত না।
এসব সম্পত্তির সাথে তারা এমন আচরন করত যে, কেউ কেউ মৃত ব্যক্তির সাথে এগুলো দাফন করত,
কারণ তারা ধারণা করত এগুলো পরকালীন জীবনে তার কাজে আসবে।আবার কেউ কেউ তা আগুনে জ্বালিয়ে ভষ্ম করে দিত
অধিকার নিকটজনের অনাত্মীয় বা দূরসম্পর্কের আত্মীয়ের জন্য নয়
ইসলামী মিরাছব্যবস্থার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মিরাছ সাব্যস্ত হয় মৃত ব্যক্তির নিকটজনের জন্য,এতে আজনবীর কোন দখল নেই।
(আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে সঠিকভাবে ইসলামী বিধান জানার তাওফীক দান করুন-আমীন)