(মুসলিমবিডি২৪ডটকম)
কোরাইশরা যখন দেখল যে,তাদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেল।তখন তারা সকলেই পরামর্শ করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হল যে,
তারা নিজেদের মধ্যে সবচেয়ে চালাক ব্যক্তি উতবা ইবনে রাবিআহ কে রাসুল সাঃ এর নিকট প্রেরণ করবে।
সে গিয়ে তাকে সবধরনের প্রলোভন দিবে।হতে পারে এতে তিনি স্বীয় দাবি পরিত্যাগ করবেন।
উতবা ইবনে রাবিআহ তাঁর নিকট হাজির হলো।রাসুল সাঃ তখন মসজিদে নামাজে ছিলেন।
উতবা নিকটে গিয়ে বলল,হে ভাতিজা!বংশ মর্যাদায় আমাদের সকলের শীর্ষে।এতদসত্ত্বেও তুমি নিজ লোকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে রেখেছ।
তাদেরকে এবং তাদের উপাস্যকে গাল মন্দ করছ।আসলে তোমার মনের বাসনা কি বলতো?
এসব দ্বারা যদি তোমার মনের বাসনা এই হয়ে থাকে যে,তুমি অনেক ধন-সম্পদের মালিক হবে;
তাহলে আমরা তোমাকে এত সব সম্পদের মালিক বানিয়ে দিতে প্রস্তুত আছি যে,তুমি মক্কার সকলের চেয়ে অধিক সম্পদের মালিক হয়ে যাবে।
আর যদি তুমি চাও যে,তুমি নেতা হয়ে যাবে;তাহলে তোমাকে কুরাইশদের সর্বসম্মতিক্রমে নেতা বানাতে প্রস্তুত আছি।
অথবা তুমি যদি চাও বাদশাহী;তাহলে আমরা তোমাকে বাদশাহ বানাতেও প্রস্তুত।আর (মাআযাল্লাহ)তোমার উপর যদি কোন জিনের আছর হয়ে থাকে,
যার এই কথা (কোরআন)তুমি লোকদের পড়ে শোনাও;অথচ সেই জিন বিতাড়নে তু মি অপারগ,
তাহলে আমরা কবিরাজ তালাশ করে তোমার চিকিৎসা করাতেও প্রস্তুত আছি।
(সিরাতে মুগলতাই-২০)
কুরাইশদের প্রলোভনে রাসুল সাঃ এর জবাব
উতবা স্বীয় বক্তব্য শেষ করলে,রাসুল সাঃ তার সকল কথার উত্তরে কোরআন শরীফের একটি মাত্র সুরা শুনিয়ে দিলেন।উতবা সেই সূরা শুনে অভিভূত হয়ে গেল।
রাসুল সাঃ এর জবাব শুনে উতবা স্বীয় গোত্রে এসে কি বলল
সে নিজ গোত্রে এসে বলতে লাগল,”আল্লাহর কসম!আজ আমি এমন কিছু কথা শুনেছি,যা আমি এর পূর্বে জীবনে কখনো শুনিনি।
আল্লাহর কসম!এগুলো কোন কবিতা নয়,কোন গনকের মন্ত্র ও নয়,কোন জাদু ও নয়।
আমার মত হচ্ছে,তোমরা সবাই এই লোকটি (রাসুল সাঃ)কে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাক।
কেননা তার যে বাণী আমি শুনেছি,আল্লাহর কসম!তার সুমহান মর্যাদা অচিরেই প্রকাশ পাবে।আমি তোমাদের মঙ্গল কামনা করি।
তোমরা আমার কথা শুনো,মানো এবং আর বেশি দিন নয় অল্প কিছু দিনই অপেক্ষা কর।যদি আরবের লোকেরা বিজয়ী হতে পারে,
তাহলে তো বিনা পরিশ্রমে এ কষ্ট থেকে রেহাই পেল।অন্যদিকে যদি সে আরববাসীদের উপর বিজয়ী হয়,তাহলে তো তার সম্মানে আমাদেরই সম্মান মিলবে।
কুরাইশরা তাদের সবচেয়ে চতুর সরদারের এ বক্তব্যে আশ্চর্য হয়ে গেল এবং এই বলে নিজেদের জান বাচাল যে,মুহাম্মদ সাঃ তাকে জাদু করে ফেলেছে। (দুরূসুস সিরাত-১৪)
কুরাইশরা রাসুল সাঃ কে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়েও যখন কাজ হলো না তখন তারা কি উপায় বের করল
যখন কুরাইশদের কোন কৌশল কাজে আসল না,তখন তারা রাসুল সাঃ ওতার সাহাবী রা:তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গের উপর অত্যাচার শুরু করল।
হযরত বিলাল রা:সহ আরো অনেককে ভীষন কষ্ট দেওয়া হল।হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসির রা:এর মাতাকে শুধু একটিমাত্র কথার কারণে নির্মমভাবে শহীদ করা হল।
এটাই প্রথম শহীদ হওয়ার ঘটনা,যা ইসলামের ইতিহাসে সংঘটিত হলো
(সীরাতে মুগলতাই-২)