ইমাম মুছারহাদ ইবনে কুদামা (রাহঃ) বলেন, একদা আমি কুফার জামে মসজিদে অবস্থান করলাম ।
এখানে এক ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম যে, ইশার নামাজের পর নফল নামাজের নিয়্যত করেছে এবং আলিফ লাম মীম থেকে অত্যন্ত মিষ্টি সুরে কেরাত পড়ছিল ।
কেরাত আমার নিকট অত্যন্ত পছন্দনীয় হল তাই আমি তার নিকটে গেলাম এবং দেখতে পেলাম তিনি হলেন ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ)।
তখন আমি বসে ক্বেরাত শুনতে আরম্ভ করলাম এবং মনে মনে কল্পনা করছিলাম যে এখন মনে হয় রুকু করবে ,
এখন মনে হয় রুকু করবে কিন্তু দেখিতে পেলাম যে,
তিনি পূর্ণ কোরান শরীফ খতম করে রুকুতে গেলেন এবং লম্বা লম্বা রুকু ও সিজদা করে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাড়ালেন,
আলহামদুলিল্লাহ থেকে শুরু করে তারতীলের সঙ্গে মধুর সুরে ক্বেরাত পড়তে আরম্ভ করলেন ।
দ্বিতীয় রাকাতেও পবিত্র কোরান শরীফ খতম করেন এবং নিয়মানুসারে নামাজ শেষ করার পর পুণরায় নফল নামাজ পড়তে আরম্ভ করেন,
এবং প্রতি রাকাতে পূর্ণ কোরান শরীফ খতম করেন ।
এভাবে ফজর পর্যন্ত নামাজ পড়তে থাকেন । আমি মনে মনে ভাবছিলাম যে, দু-এক রাত্রিতে এমন করে তাহলেতো তেমন কোন কষ্টের কথা নয় ।
ফজরের নামাজের পর ঘরে তাশরীফ নিলেন, অল্প কিছুক্ষন পরে ঘর থেকে বের হয়ে এসে ছাত্রদেরকে পড়াতে বসে গেলেন।
শত সহস্র ছাত্র দরছে অংশগ্রহন করছিল এবং এ দরছ ধারাবাহিক ভাবে জোহরের নামাজ পর্যন্ত অব্যহত ছিল ।
অত পর পুণরায় দরছ আরম্ভ করেন ধারাবাহিকভাবে আছর পর্যন্ত ,আছর থেকে মাগরীব পর্যন্ত দরছ চলছিল । মাগরীবের পর ঘরে তাশরিফ নিলেন ।
অতঃপর এশার নামাজ পড়েন এবং প্রথম রাত্রির নিয়ায় প্রত্যক রাকাতে কালামে পাক খতম করছিলেন ।
কয়েক দিন পর্যন্ত এ অবস্থা দেখে উপস্থিত লোকদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম প্রত্যেকেই বললেন যে, তিনি সব সময় এরকম করে থাকেন ।
এ ঘটনাতো প্রসিদ্ধই আছে যে, ইমাম সাহেব রাহমাতুল্লাহ আলাইহি রাত্রি কালে বিশ্রাম করতেন না ।
তিনি চল্লিশ বছর যাবত এশার নামাজের অজুর দ্বারা ফজরের নামাজ পড়ছেন ।
ইন্তেকালের পর গোসল দানের সময় গোসল দেনেওয়ালা বললেন,
হে ইমাম সাহেব আপনিইতো এশার নামাজের অজুর ধারা চল্লিশ বছর ফজর নামাজ পড়ছেন এ আমল আপনার জন্য মোবারইক হউক ।